দরুদ পাঠের ফজিলত - খাজা নিজামুদ্দীন আউলিয়া

 


দরুদ পাঠের ফজিলত —

(খাজা নিজামুদ্দীন আউলিয়া)

 কদমবুসির ঐশ্বর্য লাভ করলাম । হযরত শায়খুল ইসলাম (খাজা গন্জেশেখর) রহমতুল্লাহি আলাইহি চাসত নামাজের পর দরবারে উপস্থিত হলেন । দরবারে অনেক বুজুর্গ ও মোসাফির উপস্থিত ছিলেন । এ অধম (নিজামুদ্দীন আউলিয়া) নূরের জামাল (সৌন্দর্য) দর্শন করে মাথা জমিনে রাখলো; নির্দেশ হলো মস্তক উত্তোলন কর । নির্দেশানুযায়ী মাথা তুললাম । তিনি (খাজা গন্জেশেখর রহ.) বললেন, তুমি এসেছো খুব ভাল হয়েছে । হযরত শায়খুল ইসলাম দরবারের সকলকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি খোদার নিকট প্রার্থনা করছি নিজামুদ্দিনের সকল আশা যেন পূর্ণ হয় । এরপর দরূদ-শরীফ পাঠ সম্বন্ধে আলোচনা শুরু হলো । তিনি বললেন ‘আছারে আউলিয়া’ কিতাবে লিখা আছে, যে ব্যক্তি রাসূলে মাকবুল (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)- এর উপর মুহাব্বতের সাথে একবার দরূদ শরীফ পাঠ করে সে গুনাহ হতে এমনভাবে পাক হয় যেন সদ্য মায়ের উদর হতে ভূমিষ্ট হলো । এ ছাড়াও তার কর্মফলে অসংখ্য নেকী লিখা হয় এবং আউলিয়াদের খাতায় তার নাম সন্নিবেশিত হয় ।


এরপর অজিফা সম্বন্ধে বললেন যে সাহাবা, তাবেঈন ও পীরগণ যে সব অজিফা নিজেরা পাঠ করার জন্য নির্বাচন করেন তা তাঁরা নির্দিষ্ট সময়েই আদায় করেন । যদি দিনের অজিফা দিনে পাঠ করা কোন কারণে সম্ভব না হয় তাহলে রাতে পাঠ করে নেন । কিন্তু রাতের কোন নামাজ বা অজিফা ক্বাজা হলে তাঁরা নিজেকে মৃত মনে করেন এবং ক্রন্দন করে বলতে থাকেন যে, যদি আমি জীবিত থাকতাম তাহলে খাজায়ে কায়েনাৎ হযরত নবী করিম (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম)- এর সালাত (নামাজ) আমার দ্বারা ক্বাজা হতোনা । 


এরপর বললেন, হযরত এহ্ইয়া মোয়া’জরাজী (রহমতুল্লাহি আলাইহি)-এর অজিফা ছিলো প্রতি রাতে তিন হাজারবার দরূদ হযরত রাসূলে কায়েনাৎ (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম)- এর উপর পাঠ করা, কিন্তু এক রাতে এ অজিফা তাঁর ছুটে যায় । তখন তিনি রোদন করতে লাগলেন; তাঁর এ কান্নার কারণ জানার জন্য বহুলোক একত্রিত হয়ে গেলো এবং এ কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করতে লাগলো । উত্তরে উনি বললেন একটি বড় নেয়ামত আমার নিকট হতে দূরে চলে গেছে । যখন এহ্ইয়া তাঁর এ দুঃখের কথা বর্ণনা করছিলেন তখন গায়েবী আওয়াজ হলো, “হে এহ্ইয়া তোমাকে প্রতিদিন দরূদ পাঠ করার জন্য যে ছওয়াব প্রদান করে থাকি আজ তোমাকে তোমার অনুশোচনার কারণে তার চেয়ে একশতগুণ অধিক ছওয়াব প্রদান করলাম । এ ঘটনা বর্ণনা করতে করতে হযরত শায়খুল ইসলামের চোখে অশ্রুতে ভরে উঠলো এবং কেঁদে ফেললেন । 


এরপর (গন্জবক্স রহ.) বললেন, একবার হযরত সিনাই রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বপ্নে হযরত রাসূলে মাকবুল (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম)-কে দেখলেন যে তিনি খাজা সিনাই (রহমতুল্লাহি আলাইহি)-এর দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন । হযরত সিনাই রহমতুল্লাহি আলাইহি তখন দৌড়ে যেয়ে হুজুরেপাক (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম)- এর কদম মুবারকে পড়ে গেলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আমার প্রাণ আপনার জন্য উৎসর্গীকৃত কিন্তু আপনি আমাকে দেখে আপনার পবিত্র মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন কেন ? তখন হুজুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন,  “হে সিনাই তুমি আমার প্রতি এতো অধিক দরূদ পাঠ করেছো যে তোমাকে দেখে আমার লজ্জা হয়, বিনিময়ে আমি তোমাকে কি দিব ?”  এ পর্যন্ত বলে হযরত শায়খুল ইসলাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উচ্চস্বরে কাঁদতে লাগলেন, তারপর বললেন, তিনি কেমন ব্যক্তি ছিলেন যার দরূদ পাঠের আধিক্যতায় হুজুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) স্বয়ং পুরষ্কার নির্বাচনে লজ্জিত হয়েছিলেন । হাজার নে'য়ামত সেই বুজুর্গের প্রতি এনায়েত হোক । তিনি অতি উচ্চাসনে আরোহণ করার সম্মান অর্জিত করেছিলেন এবং তিনি একই আসনে অধিষ্ঠিত থেকে জিন্দেগী অতিবাহিত করেছেন । ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি একই অবস্থানে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং পুনরুত্থিত দিবসেও তিনি একই মর্যাদা নিয়ে উঠবেন ।


এরপর বললেন, একবার একদল ইহুদী এক স্থানে এসেছিলো । এক মুসলমান দরবেশ তাদের নিকট কিছু যাচ্‌না করলো । এমন সময় আমিরুল মু'মেনীন হযরত আলী (রাদি আল্লাহু আনহু) ঐ দিকেই যাচ্ছিলেন । ইহুদীগণ দূর থেকে তাঁকে দেখে তাচ্ছিলভাবে দরবেশকে বললো, যাও ঐতো শাহে মরদান আসছে, তাঁর কাছেই নিজের দরখাস্ত পেশ করো । দরবেশ তখন আমিরুল মু'মেনীনীকে দেখতে পায়নি, তাই সে জিজ্ঞেস করলো তিনি কোথায় ? তারা দিক নির্দেশ করে বললো ঐ আসছে । দরবেশ এগিয়ে গেলো । পিছনে পিছনে ইহুদীগণও তাকে অনুসরণ করলো । সে আমিরুল মু'মেনীন হযরত আলী রাদিআল্লাহু আনহুকে সালাম পেশ করে নিজের অভাব জানালো । কিন্তু তাঁর নিকট সে সময় দেয়ার মতো কিছুই ছিলোনা । তিনি চিন্তা করতে লাগলেন কি করা যায় । তাঁর নিকট কিছুই নেই অথচ কিছু না দিলেই নয় । এ ছাড়াও ইহুদীগণের উদ্দেশ্যটাও তিনি বুঝতে পারলেন । তিনি দরবেশকে বললেন, হাত উন্মুক্ত করো । দরবেশ হাত খুলে ধরলো । হযরত আমিরুল মু'মেনীন দশবার দরূদ-শরীফ পাঠ করে তার হাতে ফুঁ দিলেন এবং হাত বন্ধ করতে বললেন । সে হাত বন্ধ করলো । এরপর তিনি তাকে ইহুদীদের নিকট যেতে বললেন । সে হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় ইহুদীদের নিকট গমন করলো । ইহুদীগণ বিদ্রূপ করে জিজ্ঞেস করলো, কি পেলে হে দরবেশ ? দরবেশ বললো, কোন টাকা পয়সা তিনি দেননি, তিনি দশবার দরূদ-শরীফ পাঠ করে আমার হাতে ফুঁ দিয়ে বললেন, মুষ্টিবদ্ধ করে চলে যাও ৷ ইহুদীগণ একথা শুনে আরও বিদ্রূপের সঙ্গে হাসতে লাগলো এবং একজন বললো হাতটা খুল দেখি । যখন সে মুঠ খুললো তখন দেখা গেলো হাতে দশটি আশরাফি (স্বর্ণমুদ্রা) । ইহুদীগণ এ দৃশ্য দেখে বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে পড়লো । হযরত আমিরুল মুমেনীনের এ কারামাত দেখে ইহুদীগণের সকলেই ইসলাম কবুল করলো এবং এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর একই সঙ্গে আরও কয়েক হাজার ইহুদী ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে গেলো । সুবহানাল্লাহ্ !


হযরত শায়খুল ইসলাম রহমতুল্লাহি আলাইহি এরপর বললেন  খলিফা হারুনুর রশীদ একবার অসুস্থ হয়ে ৬ মাস শয্যাগত ছিলেন । তিনি দিনদিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ধমনীর স্পন্দন ক্ষীণ হতে ক্ষীণতর হচ্ছিলো । অবশেষে অবস্থা এমন এক পর্যায়ে পৌছলো যে প্রাণবায়ু নিঃশেষ হয়ে যায় যায় । সেদিন ঘটনাচক্রে হযরত শায়খ আবু বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি খলিফার সদর দরজার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন । এ সংবাদ হারুনুর রশীদ জানতে পেরে তার উজীরকে পাঠালেন তাঁকে ডেকে আনতে । উজীর খলিফার আদেশ পেয়ে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে এলেন । হযরত শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর জন্য কোনরূপ আদর আপ্যায়ন করতে নিষেধ করলেন । খলিফার এ করুণ অবস্থা দেখে তাঁর মনে দয়ার সঞ্চার হলো । তিনি কয়েকবার দরূদ-শরীফ পাঠ করে খলিফা হারুনুর রশীদের মুখে ফুঁ দিলেন এবং খলিফা ধীরে ধীরে সুস্থ হতে লাগলেন এবং অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেলেন ।


হযরত শায়খুল ইসলাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, প্রত্যেকের উচিত হযরত রাসূলে মাকবুল (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর প্রত্যহ অধিক সংখ্যকবার দরূদ -শরীফ পাঠ করা । যদি একেবারেই সময় না হয় তাহলেও প্রত্যহ অন্ততঃ ৫ বার অবশ্যই পাঠ করবে । একথা মনে রাখতে হবে যে সমস্ত অজিফার মধ্যে দরূদ শরীফই শ্রেষ্ঠ । সমস্ত রাত ইবাদত বন্দেগীর চেয়ে কয়েকবার দরূদ শরীফ পাঠ করা উত্তম । অবশ্য দরূদ বিভিন্ন প্রকারের রয়েছে । এক এক দরূদ শরীফের ফজিলত এক এক রকম । উপরে প্রত্যহ ৫ বার যে দরূদ শরীফ পাঠ করার কথা বলা হয়েছে তা নিম্নরূপ । 

“আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিন বেয়াদাদে মান ছাল্লু আল্লাইহি ওয়া ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিন বেয়াদাতে মাল্লাম ইউ ছাল্লু আলাইহি ওয়া ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিন; কামাতু হিব্বু ওয়া তারদা আনতু ছাল্লি আলাইহি ওয়া ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিন কামা ইয়াম বাগিয়াছ ছালাতু আলাইহি ওয়া ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিন কামা আমারতানা বিছছালাতি আলাইহি”


এরপর হযরত শায়খুল ইসলাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, মওলানা ফকির আবুল হাসান জিন্দোসী রহমতুল্লাহি আলাইহি বিরচিত “রওজা” কিতাবে দরূদ-শরীফ সম্বন্ধে বিস্তারিত ফজিলত ও বরকত বর্ণনা করা হয়েছে । তার মধ্য হতে কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো -

প্রথম ফজিলত   হযরত ইমাম শাফেয়ী (রহমতুল্লাহি আলাইহি) - এর ইন্তেকালের পর তাঁকে তাঁর এক ভক্ত স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আল্লাহ্তায়ালা আপনার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন ? জবাবে তিনি বলেছিলেন, তিনি তাঁর করুণা ও দয়া দ্বারা আমায় ক্ষমা করেছেন এবং ক্ষমার প্রধান উপাদান ছিলো আমার প্রতিদিনের ৫ বার দরূদ শরীফ পাঠ ৷


“রওজা” কিতাবে দরূদ-শরীফ সম্বন্ধে দ্বিতীয় ফজিলত

একদিন হযরত রাসূলে আকরাম (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) দরবারে উপস্থিত হলে প্রতিদিনের অভ্যাস মতো সাহাবাগণ তাঁকে বেষ্টনী করে বসে পড়লেন । হযরত আবু বকরের নির্দিষ্ট স্থান ছিল তাঁর সর্বডানে এবং তিনি সেখানেই বসেছেন । এমন সময় এক যুবক প্রবেশ করে ছালাম পেশ করে অপেক্ষা করলেন । হুজুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) সেই যুবককে হযরত আবু বকর (রাদি আল্লাহু আনহু) - এর পাশে বসতে বললেন । যুবক তাঁর আদেশ পালন করলেন এবং কিছুক্ষণ পর চলে গেলেন । হযরত আবু বকর (রাদি আল্লাহু আনহু) একটু চিন্তিত হলেন এবং অন্যান্য সাহাবা ভাবলেন আগন্তুক যুবক হয়তো খিজির (আলাইহিস্ সালাম) হবেন । কেননা সাহাবাদের মধ্যে এমন কেউ ছিলেন না যিনি হযরত আবুবকর রাদিআল্লাহু আনহু এর পাশে বসতে পারেন । হযরত (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে বললেন, এ যুবক আমার উপর এতো অধিক সংখ্যকবার দরূদ পাঠ করে যা ভাবনার ঊর্ধ্বে । হযরত সিদ্দিকে আকবর (রাদি আল্লাহু আনহু) জিজ্ঞেস করলেন, এ যুবক খাওয়া-দাওয়া ও অন্য কাজে মশগুল হয় কি না ? হুজুর করিম (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) উত্তরে বললেন এ যুবক খাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য কাজ যথারীতি করে থাকে এবং তার পরেও সে প্রত্যহ অসংখ্যবার দরূদ পাঠ করে; কোনদিনও বাদ দেয়না । উপরে উল্লেখিত দরূদই তিনি পাঠ করতেন । 


এ আলোচনা চলার সময় হযরত শায়খুল ইসলাম (রহমতুল্লাহি আলাইহি) এর দরবারে পাঁচজন দরবেশ প্রবেশ করে জমিনবুছি করে বসে পড়লো এবং আরজ করলো, “আমরা কাবা শরীফ অভিমুখে রওনা হয়েছি কিন্তু রাস্তা খরচ নেই” হযরত তাদের কথা শ্রবণ করার পর একটু ধ্যানস্ত হলেন । একটু পড়ে মস্তক উত্তোলন করে সামনে রক্ষিত একটা পাত্রের ভাঙা টুকরোগুলো হাতে নিয়ে ঐ দরবেশদেরকে দান করলেন । দরবেশগণ এতে মনক্ষুণ্ণ হয়ে নিজেদের মধ্যে বলতে লাগলো, এ ভাঙা পাত্রে আমাদের কি কাজে আসবে ? হুজুর তাদের কথা বুঝতে পেরে বললেন, ওগুলোর প্রতি ভালো করে তাকিয়ে দেখ, নিরাশ হওয়ার কোন কারণ নেই । তারা সেই ভাঙা টুকরোগুলো ভাল করে নিরিক্ষণ করার পর দেখতে পেল ভাঙা টুকরোগুলো সবই খাটী স্বর্ণমুদ্রায় রূপান্তরিত হয়েছে । এই কারামাত দেখে তারা সকলেই বিস্মিত হয়ে পড়লো । আমি পরে হযরত শায়খ বদরুদ্দীন ইসহাক (রহমতুল্লাহি আলাইহি) - এর নিকট হতে জেনেছিলাম হুজুর ঐ টুকরোগুলোর উপর দরূদ-শরীফ পাঠ করে ফুঁক দিয়েছিলেন ।


-----------------------

__