পবিত্র ফাতিহা-ই-ইয়াজদহম


পবিত্র ফাতিহা-ই-ইয়াজদহম 

----------------------
#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ
----------------------
#ফাতিহা_ইয়াজদহম 
১১ই রবিউস সানী অর্থাত রবিউস সানী মাসের এগার তারিখ ( ১০ তারিখ দিবাগত রাত্র ) 'ফাতেহা-ই-ইয়াজদহম' । হয়ত অনেকেই জানেন না ফাতেহা-ই-ইয়াজদহম কী। তাই আজকের এই পোষ্ট লিখার ইচ্ছা করলাম। পাঠকের বিপুলতাই আমার লিখনীর সার্থকতা মনে করব ।
ফাতেহা এর অর্থ দোয়া করা, সাওয়াব রেসানী করা, মোনাজাত করা ইত্যাদি। আর ইয়াজদাহম’ ফারসি শব্দ, যার অর্থ - 'এগার তারিখের ফাতেহা'। মোটকথা ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম বলতে এগারো তম দিনের সাওয়াব রেসানীর উদ্দেশ্যে কর্মসূচীকেই বুঝায়। ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম হলো ইমামুল আউলিয়া পীরানে পীর গাউসুল আযম দস্তগীর হজরত আবদুল কাদের জিলানি রহমতুল্লা আলাইহি-এর ওফাত দিবস স্মরণে কর্মসূচী ।
যদিও উনার জীবনী এই পোষ্টের মুখ্য উদ্দেশ্য নয় তার পরও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি উনার পিতা মাতাকে। হজরত আবদুল কাদের জিলানী রহ.-এর বাবার নাম সৈয়দ আবু সালেহ (রহঃ) এবং মায়ের নাম বিবি ফাতেমা (রহঃ)।
হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহঃ) ৪৭০ হিজরিতে ইরানের জিলান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাগদাদের মহান পীর হজরত আবু সাঈদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন মাখরুমির (রহঃ) কাছে মারেফাতের জ্ঞানে পূর্ণতা লাভ করেন এবং খেলাফত প্রাপ্ত হন। পবিত্র কুরআন ও আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শ ভুলে মানুষ যখন বিপথে পা বাড়িয়েছিল, ঠিক এমনি সময় হজরত বড়পীর (রহঃ) ইসলামের পথে মানুষকে ডাক দিয়েছিলেন। বিপথগ্রস্ত মুমিনদের সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে ইসলামকে পূনরুজ্জীবিত করেছিলেন। হিজরি ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানি তিনি ইন্তিকাল করেন।মুমিন মাত্রই প্রতি বছর ১১ রবিউস সানি ফাতেহা-ই-ইয়াজদহম পালন করার মাধ্যমে হজরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ).-কে পরম ভক্তি, শ্রদ্ধার সঙ্গে চিরকাল স্মরণ করবে।

হযরত বড়পীরের শানে চিশতীয়া তরিকার ইমাম হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ মঈনুদ্দিন চিশতী (রাহঃ) এর ১টি বাণী
'ইয়া গাউসে মো আযম নুরে হোদা
মোখতারে নবী মোখতারে খোদা' ।
অর্থ:
ইয়া গাউসে আযম! হেদায়েতের নুর,
নবীজীর মনোনীত ও আল্লাহর মনোনীত।
---------------------
ইয়া আল্লাহ্ আমাকে গাউছে পাকের বেলায়তী কদম তলে স্থান দান করুন । আমিন ।

হাদিসে সাকালাইন বা অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ



হাদিসে সাকালাইন বা অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ

#হাদিসে_সাকালাইন বা
#দুটি_ভারী_জিনিষ

আল্লাহ্ রব্বুল আলামিন বলেন,
"এবং সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিও না অথবা সত্যকে গোপন কর না যখন তোমরা জান“ ।
(সুরা – বাকারা / ৪২) 
আল্লাহ্ তা'আলা বান্দাকে সংশোদনের রাস্তা খুলে দিয়ে বলেন ,
"তবে যারা তওবা করে এবং বর্ণিত তথ্যাদির সংশোধন করে মানুষের কাছে তা বর্ণনা করে দেয়, সে সমস্ত লোকের তওবা আমি কবুল করি এবং আমি তওবা কবুলকারী পরম দয়ালু।
(সুরা – বাকারা / ১৬০) ।
এ প্রসঙ্গে একটি হাদিসের কথা উল্লেখ করতে চাই,যা হাদিসে  সাকালাইন 
(দুটি ভারী জিনিষ) নামে পরিচিত।

অতীব দুঃখের বিষয় হল যে, অনেক গুলো সনদে উল্লেখ থাকা সত্বেও বিশুদ্ব সহীহ এই হাদিসটি নিয়ে আলোচনা খুবই কম হয় ! যারা জানা থাকা সত্বেও রসূল (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) উনার এই বিশেষ হাদিসটি গোপন করে অথবা প্রচার করতে কৃপনতা করে তারা কিভাবে কাল হাসরের ময়দানে রসূল (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) উনার সাফায়াত আশা করতে পারে ? অধচ রসূলুল্লাহ্ সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের সাফায়াত ও আল্লাহর করুণা ছারা কেহই জান্নাতে যেতে পারবেনা। বিশুদ্ব হাদিসের জন্য অনেক সনদ জরুরী নয়, একটি নির্ভরযোগ্য সনদই যতেষ্ট। তাই আমি একটি মাত্র উল্লেখ করলাম। রসূলুল্লাহ্ (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন–

” হে মানবসকল, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ (সাকালাইন) রেখে যাচ্ছি , যদি এই দুইটি আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না।
প্রথমটি হচ্ছে, পবিত্র কোরআন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আমার ইতরাত, আহলে বাইত (রক্তজ বংশধর)। নিশ্চয়ই এই দুইটি জিনিষ হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে বিছিন্ন হবে না। তোমরা লক্ষ্য রাখিও এদুয়ের ব্যাপারে তোমরা কি রকম ব্যাবহার করছ।
( তিরমিজি ৩৭৮৬, ৩৭৮৭)
পথভ্রষ্টতা থেকে মুক্তি পাওয়ার সনদ হচ্ছে, মহানবী (
সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) এর রক্তজ বংশধর তথা পুতঃপবিত্র আহলে বাইতের অনুসরন ও অনুগত্য করা।

আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
"যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করে না, আমি সেসব কাফেরের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছি"। (সুরা আল ফাতাহ্ : ১৩)
-------------------
ভিডিও লিংক
https://www.facebook.com/mohammed.kaisar.50/videos/2197100710363226/

ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সংক্ষিপ্ত জীবনী – [পর্ব - ১]


-----------------------------
#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ
-----------------------------
#_ইমাম_গাজ্জালী_রহমাতুল্লাহি_আলাইহি এর আসল নাম আবু হামিদ মুহম্মদ।তাঁর পিতা ও পিতামহর উভয়ের নামই মুহম্মদ। তিনি খোরাসানের অন্তর্গত তুস নগর এর গাজালা নামক স্থানে জন্ম গ্রহন করেন। তাই সবাই উনাকে ঐ স্থানের নাম অনুযায়ী গাজ্জালী নামেই চিনে।
ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর যুগে পারস্যের সম্রাট ছিলেন সলজুক বংশীয় সুলতান রুকনুদ্দীন তোগরল বেগ। সলজুগ বংশীয় সুলতানের রাজত্বকাল মুসলমানদের চরম উন্নতির যুগ ছিল। তাঁদের পুর্বে ইরান শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত বুইয়া বংশীয় রাজাদের শাসনাধীন ছিল।এই সময় মুসলিম শক্তি সমূহ পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ,আক্রমন-প্রতিআক্রমনের ফলে দুর্বল হয়ে পরেছিল। কিন্তু সলজুক বংশীয় তুর্কীগন ইসলাম গ্রহন করলে তাদের প্রাক ইসলামী স্বভাব চরিত্র ও মুল্যবোধে বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয় এবং তাদের মাধ্যমে এক অনুপম সভ্যতা গড়ে উঠে। ফলে তারা মুসলিম বিশ্বের লুপ্ত প্রায় শক্তি ও প্রতিভাকে পুনর্জীবিত করতে সক্ষম হয়। এই শক্তির অভ্যুদয়ের ফলে খ্রীষ্টান শক্তির অগ্রগতি রহিত হয় এবং সমগ্র এশিয়ার এক বিরাট অংশ এই সুলতানগণের অধীনে এসে পড়ে। ঐ যুগে মুসলমানদের বিদ্যার্জন স্পৃহা অত্যন্ত বৃদ্ধি পায় । তৎকালে প্রচলিত ইহুদী ,খৃষ্টান ও পারসিকদের জ্ঞানার্জন সমাপ্ত করে প্রাচীন গ্রীক,মিশরীয় ও ভারতীয় জ্ঞানারহনে তারা প্রবৃত্ত হন।এ জন্যই জ্যোতিসশাস্ত্র, জড়বাদ, নাস্তিকতা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকারের মতবাদের সংমিশ্রনে মুসলমান সমাজে বহু মতানৈক্যের এবং ইসলামী বিশ্বাস ও জ্ঞানের সাথে নানারকম মারাত্বক অনৈসলামিক ধর্ম-বিশ্বাস ও জ্ঞান এমন ভাবে মিশে পড়ে যে,খাটি ইসলামী বিশ্বাস ও অনৈসলামী বিশ্বাসের মধ্যে পার্থক্য করাই দুরহ হয়ে পড়ে। অত্যধিক পরিমাণে পার্থিব জড়বাদের প্রভাবে ধর্ম জ্ঞানের শ্বাস প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় এবং মুসলমান সমাজে ইসলামী বিশ্বাস ও ধর্মকার্যের ক্ষেত্রে এক চরম বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। তা হতে সমাজকে মুক্ত ও রক্ষা করার দায়িত্বই ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর উপর অর্পিত হয়। এই ক্ষনজন্মা মহাপুরুষের অতুলনীয় প্রতিভা যে নিপুণতার সাথে এই দায়িত্ব পালন করেন, তা সমগ্র বিশ্ব বিস্ময় ও ভক্তিভরে আজীবন স্বরন করবে।
তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্হা-
তৎকালে মুসলিম রাষ্ট্রের সর্বত্র প্রথমিক স্তর হতে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত অবৈতনিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠত ছিল। ছাত্রগণের খাওয়া-পড়ার খরচ সহ মাদ্রাসার সমস্ত খরচ সরকার বহন করত। তদুপরি সকল মসজিদ ও বহু সঙ্গতিসম্পন্ন লোকদের গৃহেও মাদ্রাসা ব্যবস্থা চালু ছিল। সুতরাং সেইকালে ধনী দরীদ্র সকলের নিকটই শিক্ষার পথ সুগম ছিল। প্রবীণ ও উচ্চশিক্ষিত সুধীজন যে সকল স্থানে শিক্ষাদান করতেন ,সেসব স্হানই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পরিণত হত।
শৈশবকাল ও ছাত্র জীবন-
ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর পিতা ছিলেন দরিদ্র।তথাপি তিনি পুত্রের শিক্ষার জন্য চেষ্টার কোন ত্রুটি করেননি।ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি শৈশব কালেই পিতৃহীন হন।অন্তিম কালে তাঁর পিতা তাঁর জনৈক বন্ধুর কাছে দুই পুত্র আহমদ ও মুহম্মদ এর প্রতিপালনের ও শিক্ষার ভার অর্পন করেন এবং এ জন্য সামান্য অর্থ প্রদান করেন। শিশুদ্বয় অসাধারণ মেধার অধিকারী ছিলেন।অতি অল্পকালের মধ্যেই পবিত্রকোরআন হিফ্‌জ সমাপ্ত করে তারা শহরের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হন।আল্লামা আবু হামিদ আসকারায়েনি, আল্লামা আবু মুহম্মদ যোবায়নি প্রমুখ মহাজ্ঞানী উস্তাদের নিকট তিনি শিক্ষা লাভ করেন।খ্যাতনামা ফিকাহ শাস্ত্রবিদ আল্লামা আহমদ বিন মুহম্মদ রাযকানীর নিকট তিনি ফিকাহশাস্ত্রের প্রাথমিক কিতাবসমুহ অধ্যয়ন করেন।
উচ্চ শিক্ষার জন্য জুরজানে গমন গমন-
তাহেরানে শিক্ষা সমাপ্তির পর ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উচ্চ শিক্ষার জন্য জুরজান শহরে গমন করেন।এখানে তিনি হযরত ইমাম আবু নসর ইসমাইল রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর তত্বাবধানে শিক্ষাগ্রহন আরম্ভ করেন।তাঁর তীক্ষ্ণমেধা ও অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় পেয়ে তিনি পুত্রবৎ স্নেহে সর্বশক্তি নিয়োগ করে তাকে শিক্ষাদানে প্রবৃত্ত হন।তৎকালে শিক্ষকগণ পাঠ্যবিষয়ে যে বিষয়ে শিক্ষাদান করতেন তা শিক্ষার্থীদেরকে হুবহু লিপিবদ্ধ করতে বাধ্য করা হতো।এ লিখিত নোটগুলিকে ”তালিকাত” বলা হত। এরুপে ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর কাছে তালিকাতের এক বিড়াট ভান্ডার সংগৃহিত হল।
তাহেরানা অভিমুখে যাত্রার পথে সর্বস্ব লুন্ঠন-
জুরজানে অধ্যয়ন সমাপনান্তে ইমাম গাজ্জালী র: জন্মভুমি তাহেরান যাত্রা করেন। পথিমধ্যে দস্যুদল তালীকাত সহ তাঁর সমস্ত কিছু লুন্ঠন করে নেয়।টাকা পয়সা ও অন্যান্য সম্পদ লুন্ঠন হওয়াতে তিনি কোন কষ্ট অনুভব করলেন না । কিন্তু তালিকাত অপহরণে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হয়ে পড়েলেন। তাই দস্যুসরদারের নিকট অন্তত তাঁর সমস্ত অর্জিত বিদ্যার সন্চ্ঞয় সম্ভার তালিকাত গুলি ফেরত দেয়ার জন্য অনুরোধ করলেন।দস্যু সরদার তাকে উপহাসের স্বরে বলল। “তুমিতো বেশ বিদ্যার্জন করেছ! সবই কাগজে রয়েছে, মনে কিছু নেই। এই কথা বলে সে তার সমস্ত তালিকাত ফিরিয়ে দিল। সরদারের ব্যঙ্গোক্তি ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মনে দাগ কাটল। পরে অল্পদিনের মধ্যেই তিনি সমস্ত তালিকাত মুখস্ত করে নেন।
নিজামিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়ন-
খোরাশানের অন্তর্গত নিশাপুরে অবস্থিত নিজামিয়া মাদ্রাসা তৎকালে বিশ্বের সর্বোচ্চ শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। জুরজানের অধ্যয়ন শেষে ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর জ্ঞান পিপাসা নিবৃত হল না। তাই তিনি নিযামিয়া মাদ্রাসায় গমন করলেন। সেখানে তিনি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ আলিমরুপে স্বীকৃত ইমামুল হারামাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন এই মাদ্রসার অধ্যক্ষ।দুনিয়ার বহু দেশ হতে বহু লোক উচ্চশিক্ষার জন্য উনার নিকট উপস্হিত হতেন। তিনি এত গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন যে, দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ হতে সুলতানগণও বিভিন্ন জটিল বিষয়ের মীমাংসার জন্য তাঁর নিকট উপস্থিত হতেন। ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উপযুক্ত শিক্ষক পেয়ে তাঁর তীব্র জ্ঞান পিপাসা মিটাতে লাগলেন। ইমামুল হারামাইনও ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে দর্শন ও জ্ঞানের বিভিন্ন স্তরে খুব আগ্রহের সহিত শিক্ষা দিতে লাগলেন।
৪৭৮ হিজরিতে ইমামুল হারামাইন রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইন্তিকাল করেন। তিনি ছাত্রগণের নিকট এত প্রিয় ছিলেন যে,তাঁরা তাঁর ইন্তিকালে প্রায় উন্মাদ হয়ে পড়ে। ছাত্রগন প্রায় এক বৎসর কাল উস্তাদের শোকে মুহ্যমান হয়ে থাকে। ইমামা গজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর নিকটও উস্তাদের তিরোধান যাতনা অসহনীয় হয়ে উঠে এবং নিশাপুর তাঁর নিকট অন্দ্ধকার পুরীর ন্যয় মনে হতে লাগলো। তাই তিনি নিশাপুর পরিত্যগ করে বাগদাদ চলে আসেন ও ওখানেই পড়া লেখা শেষ করেন।
দিব্যজ্ঞান বা তাজকিয়ায়ে নফস অর্জনে বাইয়াত গ্রহন-
এই সময় ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বয়স ছিল মাত্র ২৮ বৎসর। তিনি জানতেন যে কেবল কিতাব পাঠ আল্লাহর জ্ঞান লাভের জন্য যথেষ্ঠ নয়। ইহার জন্য দিব্যজ্ঞানসম্পন্ন জীবন্ত উস্তাদের নিতান্ত প্রয়োজন। হাদিস শরীফে আছে জ্ঞান দুই প্রকার । এক প্রকার জ্ঞান হচ্ছে জবানী জ্ঞান, অন্য একটি ক্বলবী এলেম বা আত্বিক জ্ঞান। রাসুল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা বলেন, ক্বলবী এলেম বা আত্বিক জ্ঞানই হচ্ছে উপকারী জ্ঞান(মেশকাত শরীফ)।
হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, “আমি রসুল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর কাছ থেকে জ্ঞানের দুটি পাত্র অর্জন করেছি। একটি তোমাদের মধ্যে বিতরণ করেছি অন্যটি করিনি।যদি করতাম তবে আমার কন্ঠদেশ কর্তিত হতো” (বোখারী শরীফ)।
পবিএ কালাম পাকে ইহাকে তাজকিয়া এবং হাদিস শরীফে ইহাকে এহসান নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমা এর বহুমুখি শিক্ষার মধ্যে এই তাজাকিয়াও ছিল একটি অন্যতম বিষয় ।কালামে পাকে এরশাদ হচ্ছে “তিনিই উম্মিদের মধ্য থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন , যিনি তাদেরকে তাজকিয়া করেন এবং কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেন। যদিও ইতিপূর্বে তারা গোমরাহীতে নিমজ্জিত ছিল” (সুরা জুময়া, ২)
হজরত ইমাম মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ”যিনি তাসাউফ গ্রহন করলেন কিন্তু ফিক্‌হ গ্রহণ করলেন না তিনি নিশ্চই কাফের । আর যিনি ফিকহ গ্রহন করলেন কিন্তু তাসাউফ গ্রহন করলেন না, তিনি নিশ্চয়ই ফাসেক। আর যিনি উভয় জ্ঞান গ্রহন করলেন এবং সেই অনুযায়ী আমল করলেন তিনিই মুহাক্কেক বা প্রকৃত দ্বীন গ্রহণ করলেন।”
তাই তিনি তৎকালীন প্রখ্যাত দিব্যজ্ঞান বা এলমে তাসাউফ ধারী বুযুর্গ কামেল হযরত শায়েখ আবু আলী ফারমেদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর পবিত্র হস্তে বাইয়াত হয়ে দিব্য জ্ঞান আহরন করতে থাকেন।
মাদ্রাসার নিযামিয়ার অধ্যক্ষ পদে ইমাম সাহেব রহমাতুল্লাহি আলাইহি-
বাগদাদে তখন তুর্কিরাজ মালেক শাহের আধিপত্য ছিল । তাঁর প্রধানমন্ত্রী হাসান বিন আলী নিযামুল একজন অসাধারন পন্ডিত ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তি ছিলেন । তার নিয়মানুসারেই বাগদাদের বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ‘মাদরাসায়ে নিযামিয়া’ এবং উহার পাঠ্যতালিকা ‘দরসে নিযামী’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। তিনি অত্যন্ত আগ্রহের সাথে হযরত ইমাম সাহেবকে মাদরাসার অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করেন। তখন তাহার বয়স মাত্র ৩৪ বছর, এত অল্প বয়সেও তিনি অধ্যাপনা ও পরিচালনা কার্যে নিতান্ত দক্ষতা ও নিপুনতার পরিচয় প্রদান করেন। স্বয়ং বাদশাহ ও রাজপুরুষগণও রাজকার্যের জটিল সমস্যাসমূহে তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করতেন। এ সময় তার নাম দুনিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন দেশ হতে শত শত ছাত্র তার শিষ্যত্ব গ্রহণের জন্য ছুটে আসেন। মাদ্রাসা নিযামিয়ার খ্যাতিও অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। অধ্যাপনার সাথে সাথে তিনি নানা জটিল বিষয়ে গবেষণাও করতে থাকেন। এরুপে তিনি অপরিসীম জ্ঞানের অধিকারী হন।
মাদ্রাসা নিযামিয়া পরিত্যাগ-
প্রভূত যশ ও যোগ্যতার সহিত ইমাম গাযযালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি চার বৎসরকাল মাদ্রাসা নিযামিয়াতে কাজ করেন। নানা জটিল বিষয়াদির চমৎকার ব্যাখ্যা শ্রবণ এবং তাঁর জ্ঞাণের গভীরতা উপলব্ধি করে তার ছাত্রগণ একেবারে বিস্মিত হয়ে পড়ত। এখানে অবস্থানকালে তিনি দর্শন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের গ্রন্হরাজি অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন। তথাপি তাঁর মন পরিতৃপ্ত হল না। কিসের অভাবে যেন তাঁর মন আনচান করতে লাগলো। অজানাকে জানার এবং অদেখাকে দেখার জন্য তাঁর মন ব্যাকুল হয়ে উঠলো। যাবতীয় কর্মের প্রতি তাঁর মন বিতৃষ্ণ হয়ে উঠলো। তিনি ব্যাকুল বুঝলেন যে, কেবল পুথিগত জ্ঞান দ্বারা বিশেষ কোন কাজ হয় না। বিশুদ্ধ জ্ঞানের সাথে সাথে একাগ্র সাধণা ও রিয়াযত আবশ্যক। এ সম্পর্কে তিনি নিজে বলেন : ”মানুষের সদ্‌গুনরাজির বিকাশের জন্য অক্লান্ত সাধনা ও একনিষ্ঠ সংযমের একান্ত আবশ্যক।” এই উপলব্ধির পর স্বীয় স্বভাব ও কর্মের প্রতি মনোনিবেশপূর্বক দেখলাম, আমার কোন কাজই এই নীতির অনুরুপ নয়, যার দ্বারা আমার স্বভাব,আত্না ও মানবতার উন্নতি সাধন হতে পারে। আমি আরও বুঝতে পারলাম যে,আমি প্রবৃত্তির বশবর্তি হয়ে কাজ করছি এবং একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য আমার কোন কাজ হচ্ছে না। তবে আল্লাহর সন্তোষ লাভের নিমিত্ত লোকালয়ে অবস্থান করেই দুনিয়ার সকল মোহ বর্জন করতে হবে। এইরুপ চিন্তা করতে করতে যাবতীয় কর্মের প্রতি আমার বিতৃষ্ণা ও বইরাগ্যভাব জন্ম নিতে লাগলো। মাদ্রাসার অধ্যাপনা ও পরিচালনার কাজেও শৈইথিল্য দেখা দিল ,মৌনাবলম্বনের স্পৃহা বৃদ্ধি পেল; হযম শক্তি কমতে লাগলো এবং ঔষধেও অশ্রদ্ধা জন্ম নিল। চিকিৎসকগণ বললেন,” এমতাবস্থায় কোন ওষুধই ফলপ্রদ হবে না।” অন্তর দেশ ভ্রমণে বাহির হওয়ার মনস্থ করলাম। দেশের আমীর-উমরাহ,আলিম-উলামা, সুধীমন্ডলী এবং রাজপুরুষগণ এই সংকল্প পরিত্যাগের জন্য আমাকে অনুরোধ করতে লগলেন। কিন্তু আমি মনকে বশে আনতে পারলাম না। পরিশেষে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে হিজরী ৪৮৮ সনের যিলক্বাদা মাসে আমি গোপনে সিরিয়া অভিমুখে রওয়ানা হলাম।
হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এক অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে জন্ম গ্রহন করেছিলেন। জাগতিক জ্ঞান তাঁর মনের তীব্র পিপাসা মিটাতে পারেনি। তাই তিনি এবার আধ্যাত্বিক জ্ঞানের অন্নেষনে বেড়িয়ে পড়লেন। শৈশব থেকেই তাঁর ধর্মের প্রতি অনুরাগ ও জ্ঞান পিপাসা ছিল অত্যন্ত প্রবল। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সকল দার্শনিকদের মতবাদও তিনি অত্যন্ত মনোযোগের সাথে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু তাতেও তাঁর মনের কোন খোরাক মিটলো না। তাই এক অজ্ঞাত রহস্যের সন্ধানে সংসারবিরাগী সুফী-দরবেশের বেশে জীবনের দশটি বৎসর নানা দেশ পর্যটনে তিনি অতিবাহিত করেন। এই পথেই তিনি তাঁর জীবনের চির আকাঙ্খিত রহস্যের সন্ধান খুজে পান। তাঁর মন চির রহস্যময় আল্লাহর স্বরূপ উদঘাটনে সমর্থ হয় এবং তাঁর অন্তরের পিপাসা নিবারিত হয়।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মুসলিম দার্শনিক ও আলেমে দ্বীন ইমাম আবু হামেদ মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ আল-গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জীবনের প্রথম দিকে ছিলেন শাসন কর্তৃপক্ষের নৈকট্যপ্রাপ্ত একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। অন্যান্য আমীর ওমরাহগনের মতই তারও জীবনযাত্রা ছিল বর্নাঢ্য। কিন্তু ভোগ বিলাসপূর্ণ জীবনযাত্রার মধ্যেও তাঁর ভেতরে লুকিয়ে ছিল মুমিন সুলভ একটি সংবেদনশীল মন,যা সমকালীন মুসলিম জনগনের ব্যাপক স্খলন-পতন লক্ষ্য করে নীরবে অশ্রুবর্ষন করতো। ইহুদী-নাসারাদের ভোগ সর্বস্ব জীবনযাত্রার প্রভাবে মারাত্নকভাবে আক্রান্ত মুসলিম জনগনকে ইসলামের সহজ সরল জীবন ধারায় কি করে ফিরিয়ে আনা যায়, এ সম্পর্কে তিনি গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করতেন। কোন কোন সময় এ চিন্তাভাবনা তাকে আত্নহারা করে ফেলতো। ভাবনা চিন্তার এক প্রর্যায়ে এ সত্য তাঁর দৃষ্টিতে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো যে ,বর্তমানে মৃতকল্প মুসলিম জাতিকে নবজীবনে উজ্জীবিত করে তোলা একমাত্র দ্বীনের স্বচ্ছ আবে হায়াত পরিবেশনের মাধ্যমেই সম্ভব।আর তা বিলাসপূর্ণ জীবনের অর্গলে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখে হাতে পাওয়া সম্ভব নয়।এ উপলব্ধি তাড়িত হয়েই ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি একদিন পরিবার পরিজন এবং ঘর-সংসার ত্যাগ করে নিরুদ্দেশের পথে বের হয়ে পড়লেন। একদা বহুমুল্যবান পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করা ছিল যার সর্বক্ষনের অভ্যাস, সেই ব্যক্তিই মোটা চট-বস্রে আভ্রু ঢেকে দিনের পর দিন নানা স্হানে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন।
ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর এ কৃচ্ছতাপূর্ণ তাপস জীবনেরই সর্বাপেক্ষা মুল্যবান ফসল ‘এহইয়াও উলুমুদ্দীন” বা দ্বীনী এলেমের সন্জিবনী সুধা। এই মহা গ্রন্হের প্রভাবেই হিজরী ৬ষ্ঠ শতকের সুচনাকালে ইসলামের ইতিহাসে একটা উল্লেখযোগ্য পটপরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। নুরুদ্দীন জঙ্গী,সালাহউদ্দীন আইয়ুবী প্রমুখ ইসলামের বহু বীর সন্তান -যাদের নিয়ে মুসলিম উম্মাহ গর্ব করে থাকে। এরা সবাই ছিলেন ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর ভাবশিষ্য,’এহইয়াও উলুমুদ্দীন” এর ভক্ত পাঠক।
মাদ্রাসা নিযামিয়াতে অবস্হান কালে হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি মুল্যবান পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করতেন। কিন্তু দেশ পর্যটনের সময় তিনি নিতান্ত সাধারণ পোশাকে ও একটি মোটা কম্বল সম্বল করে বের হন। কিন্তু ইহাতেও তাকে খুব উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল। সিরিয়ার পথে তিনি কিছুকাল দামেশক নগরস্হিত উমায়্যা জামে মসজিদে অবস্হান করেন। তৎকলে এই মসজিদের পার্শ্বে একটি বিরাট মাদ্রাসা ছিল। হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এই মসজিদের পশ্চিম পার্শ্বস্হ মিনারের এক প্রকোষ্ঠে স্বীয় বাসস্হান নির্ধারণ করেন এবং অধিকাংশ সময়ই তাতে মুরাকাবা -মোশাহাদায় নিমগ্ন থাকতেন।অবসর সময়ে তিনি কিছুসংখ্যক অতি আগ্রহী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাদান করতেন এবং সময় সময় আলিমগনের সাথে জটিল বিষয়াদি সম্পর্কে আলোচনা করতেন।



পরবর্তী পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/326664087744317/permalink/357904647953594/

দ্বি-রত্ন (Two Jewels)



দ্বি-রত্ন (Two Jewels)

-------------------
সত্য বলিতে আমি সদা শংকিত,
যদিও প্রবল আমার আপন হিয়া।
সংশয়ে সর্বদাই দিন কাটে মোর ,

পিছে কেহ আমা বলে কিনা শিয়া।
দুটি মহামুল্যবান রত্ন রেখে যাচ্ছি,
নবীজি মোর বলেছিলেন সেদিন।
তোমরা সে'দুটিকে আঁকড়ে ধরিও,
যখনই তোমাদের আসবে দুর্দিন।
লক্ষাধিকসাহাবীগণ অভাক হইয়া,
করিলেন শ্রবণ আপন কর্ণ দিয়া।
প্রথমতঃ আমি সোপর্দ করিলাম,
কালামুল্লাহ্ নাম আল্ কুরআন।
শক্ত করে তাঁহারে আঁকড়ে ধরিও।
বিপদ যত আসুক তা-না-ছারিও।
অতঃপর নবীজি করিলেন বয়ান,
আমার কথা শোন, দিয়া মনপ্রাণ।
আরেক মহা মুল্যবান জিনিষ দিব,
পাবে তোমরা যখন আমি না-রইব।
পরকালে সেই জন বেশক্ হবে ধন্য,
আমার পরিজনকে যে করিবে মান্য।
সর্গের দিকে চলিবে সেই যুগল ধারা,
যে জন ধরিবে তাহা হবেনা পথহারা।
সমান্তরাল ভঙ্গিমায় চলিবে ততক্ষন
হাউসের কুলে না-পৌছিবে যতক্ষন।

------------
#Mohammed_kaisar
(#হাদিসে_সাকালাইন অবলম্বনে)

প্রার্থনা

প্রার্থনা
ওগো আল্লাহ্ দৃষ্টিদান করিবেন সেদিন,
করুনার কুদরতি নয়ন যুগলে প্রভূ,
যাকে আপনি বলেছেন ইয়াউমুদ্দিন।
সেদিন আপনি করিবেন, পূত মোরে,
করেছি পাপ যত আমি, ধরনী জুড়ে।
ক্ষমা করিবেন আপনি সেদিন মোরে,
মম পিতা মাতা সহ সকল মুমিন'রে।
পোষাক সেদিন দিবেননা মোরে জলন্ত,
যা পরিলে, দহন করিবে কাল-অনন্ত।
বান্দা নামে অভিহিত করুন আমায়,
যতদিন অবকাশ দিবেন এ দুনিয়ায়।
সুচনা লগ্নে যেন নবীজি-রে আমি পাই,
পরপারে যখন আমি ত্রস্ত হব তথায়।
বেহেস্ত দোজক কিছুই নয় মোর কামনা,
আপনার সন্তুষ্টি পাব তা মোর বাসনা।
পিতামাতা পরিজনের পক্ষে কবুল করুন,
যারাই পঠিবে শিশু কিশোর বৃদ্ধ তরুন।
সালাম সে-তো সর্বদা নবি রসুলের প্রাপ্য,
প্রশংসা করি আপনার যতটুকু মোর সাধ্য।
রক্তরেশ নয়নে মোর দিকে নয় কভু।

'আমিন'❤️

১৭ রমজান মা আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) এর ওফাত দিবস

১৭ রমজান মা আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) এর ওফাত দিবস
-----------------------
#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ
-----------------------
ইসলামের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন ১৭ই রমজান 
৫৭ হিজরীর ১৭ রমজান রোজ মঙ্গলবার উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) ৬৮ বছর বয়সে ওফাত বরণ করেন । কুরআন হাদীসের জ্ঞান এবং ইসলামী শরীয়তের মাসআলা মাসায়েলের ব্যাপারে তিনি ছিলেন মহিলাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।জান্নাতুল বাকীতে তাহাকে দাফন করা হয় । বিস্তারিত জানাতে ভিডিও আপলোড করলাম । আরো জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
https://www.facebook.com/groups/326664087744317/permalink/406942393049819/
-------------------------

১৭ ই রমজান ইয়াউমুল ফুরকান



১৭ ই রমজান ইয়াউমুল ফুরকান
অসত্যের বিরুদ্ধে শান্তির পক্ষে বদর প্রান্তরে প্রথম যুদ্ধ
-------------------------------
(#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ)
---------------------------------
১৭ রমজান, ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ দিবস

১৭ই রামাজান, ২য় হিজরী (৬২৪ খৃঃ) ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বদর যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ যা মুসলিম ও কাফিরদের মধ্যে সংগঠিত হয়।

মাত্র ৩১৩ জন সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে মহানবী (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর নির্দেশে
মদিনা শরিফের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ৮০ মাইল দূরে বদর নামক স্থানে কাফেরদের সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। মহান আল্লাহ্ মুসলমানদের সেই যুদ্ধে ফেরেস্তাদের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করেছিলেন।অন্যদিকে কাফের কুরাইশ বাহিনীর সংখ্যা ছিল ১০০০। তন্মধ্যে ১০০ জন অশ্বারোহী, ৭০০ জন উষ্ট্রারোহী ও বাকিরা পদব্রজী ছিল।তারপরও তারা পরাজিত হয়ে পলায়ন করতে বাধ্য হয়েছিল। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন " আর এতো সুনিশ্চিত যে, আল্লাহ্ বদর যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করেছিলেন, অথচ তোমরা ছিলে দুর্বল।
— আল্-কুরআন, সূরা আলে-ইমরান; আয়াত : ১২৩

সত্যপথের অনুসারী অল্পসংখ্যক রোজাদার মুসলমান বিশাল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত মিথ্যার অনুসারী কাফের মুশরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করায় সত্য-মিথ্যার চিরপার্থক্য সূচিত হয়ে যায়।
বস্তুত আল্লাহর সাহায্য বিজয়ের উৎস ।
তাই এ দিবসকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বলা হয়। আল-কুরআনে এই দিনকে ইয়াওমূল ফুরক্বান বলা হয়।
---------------------------------
আর এভাবে সত্যের পক্ষে প্রথম বিজয় অর্জিত হল।

বর্তমানে আমরা কতো দিবসইতো পালন করছি। যদি আপনি সত্যের পক্ষে একজন হিসেবে নিজেকে মনে করেন তাহলে ১৭ই রমজানে সত্যের পক্ষে বদর পান্তরের এ যুদ্ধকে বদর দিবস হিসেবে স্মরন করুন। এ যুদ্ধে শহীদদের জন্য দোয়া করুন।
---------------------------------
আল্লাহ্ আমাদেরকে বদরের শহীদদের উসিলায় জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন।
আমিন।

মাকরুহ

মাকরুহ

#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ

#মাকরুহ
মাকরুহ অর্থ খারাপ বা নিন্দনীয়।
মাকরুহ এমন আমল যা পালন করার তুলনায় না করা উত্তম। অর্থাৎ যে কাজ করা জায়েজ কিন্তু না করা উত্তম। মাকরুহ কাজ করলে শাস্তি পেতে হবে না, কিন্তু এ ধরনের কাজ এড়িয়ে যেতে বলেছে ইসলাম।যেমন উদাহরন স্বরুপ বলতে পারি,আসরের ফরজ নামাজের পরে সুর্য ডুবা পর্যন্ত নামাজ (সিজদা) মাকরুহ্ (অঅনুমোদিত)।মাকরুহ্ হারামও নয় আবার হালালও নয় । তবে হালালের সাথে সংঘর্ষিত । এড়িয়ে চলাই উত্তম ।
ইসলামে নিষিদ্ধ ব্যাপারগুলো তিন পর্যায়ের : হারাম, মাকরুহ তাহরীমী,ও মাকরুহ তানজীহী। 
মাকরুহ অর্থ খারাপ বা নিন্দনীয়। তাহরীমী অর্থ হারামকারী অর্থাৎ যে মাকরুহ হারামের কাছাকাছি। 
যে সকল কাজ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কুরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ নেই, তবে কোন কোন হাদীসে এর প্রমাণ পাওয়া যায় তাকে মাকরুহ তাহরিমী বলে। 
যে সকল কাজ শরীয়তের দৃষ্টিতে ঘৃণাজনক কিন্তু এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষ কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বরং পরোক্ষ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাকে মাকরুহ তানজীহী বলে। 
আদর্শ মুসলমানগণ মাকরুহ তানজীহীও পরিত্যাগ করেন।
কিছু কিছু মাকরুহ্ এর কারনে ফরজ ও মাকরুহ্ হয়ে যায় । য়েমন :-
সিয়াম পালন অবস্থায় যেসব কাজ করা অপছন্দনীয়। এ জাতীয় কাজ সিয়াম ভঙ্গ করে না কিন্তু এসব চর্চা করা কখনো কখনো সিয়াম বিনষ্টের কাছাকাছি নিয়ে যায়।
উদাহরন স্বরুপ বলতে পারি , রোজা অবস্থায় অযুর সময় গড়গড়া করে কুলি করা, জোড় দিয়ে নাকে পানি টানা। এতে গলা বা নাক দিয়ে ভিতরে পানি প্রবেশ করার সম্ভাবনা থেকে যায়।
----------------------------
আল্লাহ্ আমাদেরকে মাকরুহ্ থেকে হেফাজত করুন । আমিন ।


হারাম

.হারাম


#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ

#হারাম একটি আরবি ইসলামি পরিভাষা। এ দ্বারা নিষিদ্ধ কাজ বোঝানো হয়। মন্দ কাজসমূহের মধ্যে হারামকে সবচেয়ে গুরুতর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদি কোনো কাজ হারামের মধ্যে পড়ে তবে তা যেকোনো ভালো উদ্দেশ্যেই করা যায় না। তবে ব্যক্তি নিরূপায় হয়ে হারাম কাজ করলে তা পাপ হিসেবে গণ্য হয় না। হারাম বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া কিছু হারাম বিষয় ইজতিহাদের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। এসকল ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাজহাবে নিয়মের পার্থক্য হতে পারে।
#হারাম কাজ সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ। কতিপয় হারাম কাজের জন্য শরিয়া কর্তৃক শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে। এছাড়া ইসলাম অনুযায়ী হারামে লিপ্ত ব্যক্তির জন্য মৃত্যু পরবর্তী সময়ে শাস্তির কথা বলা আছে। হারাম কাজের মধ্যে রয়েছে মানুষ হত্যা, চুরি-ডাকাতি, মদপান, সুদের লেনদেন, ঘুষ আদানপ্রদান, ধর্ষণ, ব্যভিচার, মৃত পশুপাখির মাংস খাওয়া প্রভৃতি।
#হারাম ফরযের ও হালালের বিপরীত । যদি কেহ হারাম কাজ অস্বীকার করে অর্থাৎ যদি কেহ হারাম কাজকে হালাল এবং জায়েজ মনে করে, তবে সে কাফের হইবে । আর যদি বিনা ওজরে হারাম কাজ করে কিন্তু অস্বীকার না করে অর্থাৎ হারামকে হালাল মনে না করে, তবে সে কাফির হইবে না, ফাসেক হইবে, শাস্তির উপযুক্ত হইবে । হারামকারী ইসলামে গুনাহ্গার বলে বিবেচিত।
------------------------------------

তাওবাতান নাসূহা

তাওবাতান নাসূহা 
#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ
-----------------------------
#_তাওবাতান_নাসূহা
আল্লাহ বলেন, ইয়া আইয়ুহাল্লাজীনা আমানু তূবূ ইলাল্লাহি 'তাওবাতান্ নাসূহা।’
(সুরা তাহরিম, আয়াত - ৮)
অর্থ : হে মুমিনগণ খাস তওবা করো। (নাসুহার মতো)।
জেনে নিন ' তাওবাতান্ নাসূহা ’ বলতে কি রকম তওবা বা নসূহ্ কি রকম তওবা করেছিলেন।
নাসুহ্ একজন পুরুষ লোক ছিল। কিন্তু সে মেয়ে সেজে বাদশাহর মেয়েকে গোসলের কাজে নিয়োজিত ছিল। বাদশাহর মেয়েকে নিজ হাতে গোসল করাতো। বাদশাহ, রাজকন্যা এমনকি রাজদরবারে কেউই জানতো না যে, নাসুহ্ একজন পুরুষ লোক। সবাই তাকে মেয়ে লোক হিসেবে জানতো। একদিন বাদশাহর মেয়ের গলার অলংকার হারিয়ে গেছে। কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সমস্ত দাস-দাসীকে লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। আর মাত্র একটি লোক বাকি আছে। তাকে তল্লাশি করার পর নাসুহকে তল্লাশি করা হবে। নাসুহ্ এখন গভীর চিন্তায় পড়ে গেল। হায় রে, আমাকে যদি তল্লাশি করা হয়, তাহলে আমি যে পুরুষ, তা প্রমাণ হয়ে যাবে বা প্রকাশ হয়ে যাবে। রাজকন্যাকে একজন পুরুষ গোসল করিয়েছে, এ অপরাধে আমার মৃত্যুদণ্ড হবে। এ কথা ভেবে নাসুহ্ হত্যার ভয়ে জীবনের ভয়ে মহান আল্লাহর কাছে মনে মনে খালেস তওবা করতে লাগলো। মাবুদ আমি একজন পুরুষ হয়ে বাদশাহর মেয়েকে গোসল করার দায়িত্ব নিয়ে যে পাপ করেছি, জীবনে আমি আর কোনোদিনও এ পাপ কাজ করবো না। তুমি আমাকে ক্ষমা করো। নাসুহার তওবা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে গেল। তাকে তল্লাশি করবে এমন সময় একটি পাখি গলার অলংকারটি এনে রাজকন্যার সামনে ফেলে দিল। নাসুহাকে আর তল্লাশি করা হলো না। সেই দিন হতে নাসুহা জঙ্গলে যেয়ে আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন হলো এবং আর জনসন্মুখে আসেননি এবং আল্লাহর অলিতে পরিণত হয়ে গেল।
(সূত্র : ভেদে মারেফত বা ইয়াদে খোদা)
-----------------------
আল্লাহ্ আমাদেরকে তাওবাতান নাসূহা নসীব করুন।
আমিন।

হাক্ক বা অধিকার


হাক্ক বা অধিকার
#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ
-----------------------------
#_হাক্ক_বা_অধিকার দুই প্রকার 
(১) #_হাক্কুল্লাহ
(২) #_হাক্কুল_ইবাদ
হাক্কুল্লাহ অর্থ আল্লাহর হক। (হাক্ক) ﺣَﻖّ অর্থ কয়েক রকম আছে তার মধ্যে এক অর্থ হলো অধিকার, হক, দাবি, পাওনা। এখানে হাক্কুল্লাহ অর্থ আল্লাহর হক, আল্লাহর পাওনা। আর ﻋِﺒَﺎﺩ (ইবাদ) শব্দটি ﻋَﺒْﺪ (আব্দ) শব্দের বহুবচন। যার অর্থ দাস, বান্দা। এখানে হাক্কুল ইবাদ অর্থ বান্দার হক, বান্দার অধিকার, বান্দার পাওনা।
নিচের আয়াতে হাক্কুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর হক এবং হাক্কুল ইবাদ অর্থাৎ বান্দার হাক্ক-এর কথা
মহান আল্লাহ বলেছেন;
ﻭَﺍﻋْﺒُﺪُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﻟَﺎ ﺗُﺸْﺮِﻛُﻮﺍ ﺑِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ۖ ﻭَﺑِﺎﻟْﻮَﺍﻟِﺪَﻱِﻥْ ﺇِﺣْﺴَﺎﻧًﺎ ﻭَﺑِﺬِﻱ ﺍﻟْﻘُﺮْﺑَﻰٰ ﻭَﺍﻟْﻴَﺘَﺎﻣَﻰٰ ﻭَﺍﻟْﻤَﺴَﺎﻛِﻴﻦِ ﻭَﺍﻟْﺠَﺎﺭِ ﺫِﻱ ﺍﻟْﻘُﺮْﺑَﻰٰ ﻭَﺍﻟْﺠَﺎﺭِ ﺍﻟْﺠُﻨُﺐِ ﻭَﺍﻟﺼَّﺎﺣِﺐِ ﺑِﺎﻟْﺠَﻨْﺐِ ﻭَﺍﺑْﻦِ ﺍﻟﺴَّﺒِﻴﻞِ ﻭَﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧُﻜُﻢْ ۗ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﺎ ﻳُﺤِﺐُّ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﺨْﺘَﺎﻟًﺎ ﻓَﺨُﻮﺭًﺍ
তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না।
আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট আত্মীয়-প্রতিবেশী, অনাত্মীয়-প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।
(আন-নিসা, ৪/৩৬)
Worship Allah and associate nothing with Him,
and to parents do good, and to relatives, orphans, the needy, the near neighbor, the neighbor farther away, the companion at your side, the traveler, and those whom your right hands possess. Indeed, Allah does not like those who are self-deluding and boastful.
(Al Quran - 4:36)

---------------------------
(১) #_হাক্কুল্লাহ
(২) #_হাক্কুল_ইবাদ।

‘হাক্কুল্লাহ’ বা আল্লাহর হক।

‘হাক্কুল্লাহ’ বা আল্লাহর হক। 

-----------------------------

#রসুল_সঃ_এর_সুন্নত_ই_আদর্শ

#_হাক্কুল্লাহ বা #_আল্লাহর_হক

মহান রব্বুল আ’লামীন মানুষকে অত্যন্ত সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণরূপে সৃষ্টি করে এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।আল্লাহ্ বলেন,- “লাক্বাদ্‌ খালাক্ব্‌ নাল ইন্‌সা-না ফী আহ্‌সানি তাক্বওয়ীম্‌” অর্থাৎ, ‘আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে’ (সূরা আত-ত্বীন - ৪)এর অর্থ হচ্ছে মানুষকে এমন উন্নত পর্যায়ের চিন্তা, উপলব্ধি, জ্ঞান ও বুদ্ধি দান করা হয়েছে, যা অন্য কোন সৃষ্টিকে দেয়া হয়নি।এটি মানুষের জন্য বিশেষ করুনা।আল্লাহ পবিত্র কুরআন মজিদে অনেক স্থানে আল্লাহর করুনার স্মরন করার জন্য তাগিদ করেছেন।আল্লাহ তা’লা বলেছেন:হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুবিন্যস্ত করেছেন এবং সুষম করেছেন। যিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন।সুরা আল-ইনফিতার: ৬-৮অন্যত্র বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে বের করেছেন। তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদেরকে কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর দিয়েছেন, যাতে তোমরা অনুগ্রহ স্বীকার কর।সূরা আন-নাহল: ৭৮মহান রাব্বুল আ’লামীন আমাদের উন্নত করে সৃষ্টি করে এই দুনিয়ায় একটা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের পাঠিয়েছেন।প্রতিনিধির কাজ হলো - সে যার প্রতিনিধি, তার আনুগত্য করে চলবে, তার আজ্ঞানুবর্তীতা, তার শাসন এবং তার উচ্চ ক্ষমতাকে মেনে নিয়ে সেই ভাবে চলবে। এই প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা মহান আল্লাহ তা’লার কাছ থেকে প্রতিটি মানুষ ব্যক্তিগতভাবে লাভ করেছে। এজন্যে প্রতিটি ব্যক্তি নিজ নিজ স্থানে এই পদমর্যাদার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।বান্দার উপর সবচেয়ে বড় নেয়ামত হল (1) রাসূল (সাঃ)-কে প্রেরণ করা, (2) কিতাব অবতীর্ণ করা (3) ইসলামের হেদায়াত দান করা।সু্তরাং এ সবের প্রফুল্লচিত্তে স্মরণ করা আল্লাহর প্রতি বান্দার কর্তব্য,তথা বান্দার প্রতি আল্লাহ্'র হক।বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা নেয়ামতের সবচে’ বড় শুকরিয়া। এরপর নবী মুহাম্মাদ সাঃ-এর রিসালাতের স্বীকৃতি দান আরেক শুকরিয়া। রসুল সঃ কে মহা রহমত স্বরুপ পেয়েছি এটাও বড় শুকরিয়া অতঃপর ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। আর আল্লাহ প্রদত্ত কোন নেয়ামতই ক্ষুদ্র নয়। আল্লাহ তায়ালা কৃতজ্ঞশীল বান্দাদেরকে নেয়ামত বৃদ্ধি, স্থায়িত্ব ও বরকতের প্রতিশ্রুতি ও গ্যারান্টি দিয়ে বলেন- যদি তোমরা কৃতজ্ঞশীল হও, তবে আমি তোমাদের আরো বাড়িয়ে দেব আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার শাস্তি বড়ই কঠোর। সূরা ইবরাহিম- ৭আল্লাহ্ বলেন,হে বনী আদম! মনে রেখো, যদি তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকে কোন রাসূল এসে তোমাদেরকে আমার আয়াত শুনাতে থাকে, তাহলে যারা আমার নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকবে এবং নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন করে নেবে, তাদের কোন ভয়ভীতি থাকবে না এবং তারা দুঃখিত ও চিন্তিত হবে না।সূরা আল-আরাফ: ৩৪-৩৫আমাদের মাঝে রসুল (সঃ) এসে গেছেন, নিশ্চিত আর কোন নবী বা রসুল আসবেননা।তাহলে আমরা কার অপেক্ষায় এখনো আল্লাহর নাফরমানী করা থেকে বিরত না হয়ে নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন না করে বসে আছি ! এখানে আমরা উপরোক্ত আয়াতের হক্বুল্লাহ্'র খেয়ানত করতেছি।আল্লাহ তা‘আলা বলেন,‘আমি জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছি কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্য’।সুতরাং বান্দার নিকটে আল্লাহর হক হ’ল তাঁর ইবাদত ও আনুগত্য করা।(যারিয়াত ৫১/৫৬)।আল্লাহ্'র সকল হুকুমই আমাদের জন্য ইবাদত।তার মদ্যে কিছু ইবাদতকে বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়েছে #_শাহাদাহ্‌ (#_তওহীদ,#_রেসালত#_নামাজ_বা_সালাহ্,#_রোজা,#_হজ্ব ও #_যাকাত । এই সব হচ্ছে হাক্কুল্লাহ্ যা অস্বীকার কারি চীরজাহান্নামী, অনাদায়কারী অবশ্যই শাস্তি ভোগ করিতে হইবে।যদি শির্ক না করে থাকে এবং রেসালতের রজ্জুধরে আল্লাহর কাছে কোমল হৃদয়ে তওবা করে, আল্লাহ্ তায়ালা বিশেষ অনুগ্রহে ক্ষমা করতে পারেন।যেমন (শাফায়াত)।আল্লাহ্ বলেন,আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো।(জাহান্নামের দিকে) কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন।আবার বিভিন্ন ইবাদত ও কর্মের দ্বারায় কিছু কিছু ছগিরা গুনাহ মাফ হয়ে থাকে যেমন আল্লাহ বলেন, “যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমি তোমাদের (ছাট) গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।” (সূরা নিসা: ৩১)রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:“পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুমআ থেকে আরেক জুমআ এবং এক রামাযান থেকে আরেক রামাযান এতদুভয়ের মাঝে সংঘটিত সমস্ত পাপরাশীর জন্য কাফফারা স্বরূপ যায় যদি কবীরা গুনাহ সমূহ থেকে বেঁচে থাকা যায়।” (মুসলিম)আল্লাহ তওবা করার জন্য মানুষকে উপদেশ দিয়েছেন যেন আল্লাহর অনাদায়ী হক ক্ষমা করিয়ে নেয়া যায়।যেমন আল্লাহ্ ইরশাদ করেন,'আপনি আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল দয়ালু'।(আল-হিজর : ৪৯)আর তোমরা নিজেদের পালনকর্তা সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর।(হুদ : ৩)আল্লাহ দিবা ও রাত্রি পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা এর পূর্ণ হিসাব রাখতে পার না। অতএব তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ন হয়েছেন। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর।। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে এবং পুরস্কার হিসেবে বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।আল্লাহর হক আল্লাহ মাপ করবেন,কিন্তু যা #_হাক্কুল_ইবাদ। বা #বান্দার_হক তাহা কখনো তিনি মাপ বা ক্ষমা করবেননা।বান্দার হকের পরিনতি জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।আল্লাহ্ আমাদেরকে সকল প্রকার খেয়ানত থেকে মুক্ত রাখুন। আমিন।---------------------------https://www.facebook.com/groups/173687513131278/permalink/334999357000092/


নামাযে বিসমিল্লাহ নীচু স্বরে পড়া সুন্নত

নামাযে বিসমিল্লাহ নীচু স্বরে পড়া-

Besimah Bismillah in the lower voice-



#_নামাযে_বিসমিল্লাহ_নীচু_স্বরে_পড়া_সুন্নত
সুন্নাত হলো নামাযী সূরা ফাতিহার পূর্বে নীচু স্বরে বিসমিল্লাহ পড়ে আল হামদু-লিল্লাহে থেকে ক্বিরআত শুরু করবে। কিন্তু মাযহাব অমান্যকারী ওয়াহাবী সম্প্রদায় (ছাড়াও আরো কিছু সম্প্রদায়) ‘বিসমিল্লাহও’ উচুস্বরে পড়ে যা সুন্নাতের পরিপন্থী। বিসমিল্লাহ আস্তে পড়ার ব্যাপারে প্রচুর হাদীস শরীফ বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে এখানে কিছু উল্লেখ করা হচ্ছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কবূল করুন।
হাদীস নং-১-৩: ইমাম মুসলিম বোখারী ও আহমদ (রাহিমাহুমুল্লাহ) হযরত আনাস (রাদ্বিঃ) থেকে বর্ণনা করেন:
قَالَ صَلَيَّتَ خَلْفَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَخَلْفَ أَبِىْ بَكَرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ فَلَمْ اَسْمَعْ اَحْدًا مِنْهُمْ يَقْرَءُ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ
আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবূ বকর সিদ্দীক, ওমর ফারুক ও উসমান যুননূরাইন রাদ্বিআল্লাহু আনহুম এর পিছনে নামায পড়েছি। কিন্তু তাদের কাউকে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়তে শুনিনি।
হাদীস নং-৪: ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেনঃ
وَعَنْ اَنَسٍ أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاَبَابَكَرِ وَعُمَرَ كَانوْا يَفْتَتِحُوْنَ الصَّلَاةَ بِلْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
নিশ্চয়ই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবূ বকর সিদ্দীক ও হযরত ওমর রাদ্বিআল্লাহু আনহুমা আল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন পড়ে নামাযের কিরাত শুরু করতেন।
হাদীস নং-৫-৭: ইমাম নাসাঈ ইবনে হাব্বান তাহাবী প্রমুখ হযরত আনাস (রাদ্বি:) থেকে বর্ণনা করেন:-
قَالَ صَلَيَّتُ خَلْفَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِىْ بَكَرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَان فَلَمْ اَسْمَعُ اَحْدًا مِنْهُمْ يَجْهَرُ بِبِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ
অর্থাৎ আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবূ বকর সিদ্দীক, ওমর ফারুক ও ওসমান রাদিআল্লাহু আনহুম এর পিছনে নামায পড়েছি। তাদের কাউকে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম উচু আওয়াজে পড়তে শুনিনি।
হাদীস নং-৮-১১: তাবরানী মু’জামুল কবীরে আবূ নুআইম হুলিয়া’তে ইবনে খুযাইমাহ এবং তাহাবী হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন:
أَنَّ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبَابَكَرٍ وَعُمَرُ كَانُوْا يُسِرُّوْنَ بِبِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ
অর্থাৎঃ নিশ্চিই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবূ বকর, ওমর ফারুক রাদ্বিআল্লাহু আনহুমা ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ নীচু স্বরে পড়তেন।
হাদীস নং-১২-১৪: আবূ দাউদ দারিমী তাহাবী প্রমুখ হযরত আনাস রাদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন:
أَنَّ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبَابَكَرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ كَانُوْا يَسْتَفْتِحوْنَ الْقِرَ اءةَ بِالْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
অর্থাৎ নিশ্চয়ই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ বকর, ওমর ফারুক ও ওসমান রাদিআল্লাহু আনহুম ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ থেকে ক্বিরাআত শুরু করতেন।
হাদীস নং- ১৫: ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করে:
নিশ্চয়ই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবূ বকর, ওমর ও ওসমান রাদিআল্লাহু আনহুম ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ বলে ক্বিরাআত আরম্ভ করতেন। আর ক্বিরাআতের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়তেন না, ক্বিরাআতের শেষেও পড়তেন না।”

হাদীস নং-১৬: ইবনে আবি শায়বাহ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন-
عَنْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يُخْفِى بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّ حِيْمِ وَالْاِسْتِعَاذَةَ وَرَبَّنَالَكَ الْحَمْدَ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ আঊযুবিল্লা এবং ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ নীচুস্বরে পড়তেন।
হাদীস নং -১৭: ইমাম মুহাম্মদ কিতাবুল আছার এ হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেনঃ
قَالَ اَرْبَعٌ يُخْفِيْهِنَّ الاِمَامُ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ وَسُبْحَانَكَ اللهُمَّ وَالتَّعُوْذَ وَاَمِيْنَ
তিনি বলেন চার বিষয়ে ইমাম নীচু স্বরে পড়বেন- বিসমিল্লাহ, সুবহানাকা আল্লাহুম্মা, আঊযুবিল্লাহ ও আমীন।
হাদীস নং-১৮-১৯ ইমাম মুসলিম, আবূ দাউদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণনা করেন:
قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَفْتِم الصَّلَاة بِالتَّكْبِيْرِ وَالْقَرَاءَةَ بِالْحَمْدِ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায শুরু করতেন এবং ‘আল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামী’ দিয়ে ক্বিরাআত আরম্ভ করতেন।
হাদীস নং-২০: আবদুর রাযযাক আবূ ফাখতাহ থেকে বর্ণনা করেনঃ-
اَنَّ عَلِيًّا كَنَ لَايَجْهَرُ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ وَكَانَ يَجْهَرُ بِالحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ
হযরত আলী মুরতোদ্বা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিসমিল্লাহ উচু স্বরে পড়তেন না আলহামদুলিল্লাহ উচু স্বরে পড়তেন।
এ প্রসঙ্গে আরো অনেক হাদীস শরীফ পেশ করা যেতে পারে, কিন্তু আমরা এখানে শুধুমাত্র বিশটা হাদীসকে যথেষ্ট মনে করছি। বিস্তারিত জানার ইচ্ছা হলে তাহাবী ও সহীহ বোখার শরীফ কিতাবদ্বয় অধ্যয়ন করা যেতে পারে।
বিবেকও চায় যে বিসমিল্লাহ উচু স্বরে পাঠ না করা। প্রত্যেক সূরার শুরুতে যে বিসমিল্লাহ লেখা আছে তা ঐ সূরাগুলোর অংশ তথা অন্তর্ভুক্ত নয়। শুধুমাত্র সূরাগুলোকে বিভক্ত করার জন্য লেখা হয়েছে এবং হাদীস শরীফেও বর্ণিত আছে, যে নেককাজ ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ে শুরু করা হয়নি তা অপূর্ণ। যেমনি ভাবেনামাযী বরকতের জন্যই ক্বিরাআতের শুরুতে আঊযুবিল্লাহ পড়ে অথচ তা নীচু স্বরেই পড়ে। কেননা আঊযুবিল্লাহ কোন সূরার অংশ নয়।
একইভাবে বরকতের জন্যই বিসমিল্লাহ পড়া হয় এবং তা নীচু স্বরেই পড়া হয়। কেননা বিসমিল্লাহও প্রত্যেক সূরার অংশ নয়। তবে সূরা নামল শরীফে যে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ রয়েছে তা ঐ সূরারই অংশ আর ইমামও তা উঁচু স্বরেই পড়ে থাকেন। কেননা তা ঐ সূরার আয়াত। এ জন্য ইমাম শুধুমাত্র কোরআনুল করীমকে উঁচু স্বরে পড়বেন। কিন্তু যে বিসমিল্লাহ সূরার প্রথমে লেখা হয় তা সূরার অংশ নয় বিধায় নীচু স্বরে পড়াই বাঞ্চনীয়।
-
--------------------------------
সুত্রঃ জা’আল হক ৩য় খন্ড
লিংক
https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=388889071535887&id=379212072503587

Besimah Bismillah in the lower voice

#_namay_bismillah_love_love_read_content_content
Sunnat will begin Qasr from Al Hamdu-Lillah when Bismillah recites the lower voice before the Prayer Surah Fatiha. But the Wahhabi disobedience of the scholars (in addition to some other groups) 'Bismillah' also goes upside down which is contrary to Sunnah. A lot of Hadith Sharif has been narrated about the recitation of Bismillah. Some of them are mentioned here. Accept the name of Allah Almighty.
Hadith No. 1-3: Imam Muslim Bukhari and Ahmad (Rahimahumullah) narrated from Anas (Radi):
قال صليت خلف رسول الله صلى الله عليه وسلم وخلف أبى بكر وعمر وعثمان فلم اسمع احدا منهم يقرء بسم الله الرحمن الرحيم
I have prayed behind the Prophet صلى الله عليه وسلم, Abu Bakr Siddiq, Omar Farooq and Othman Jonunnur, RAbdullah Allaum. But none of them heard Bismillahir Rahimir Rahim reading.
Hadith no-4: Imam Muslim Rahmatullahi narrated from Anas (May Allah be pleased with him):
وعن انس أن النبى صلى الله عليه وسلم وابابكر وعمر كانوا يفتتحون الصلاة بلحمد لله رب العالمين
Surely the Prophet (peace be upon him) used to start the Prayer during Abu Bakr Siddiq and Hadrat Omar Rabiullah Anhuma Al Hamdulillah Rabi Bala alamin.
Hadith no-5-7: Imam Nasai Ibn Habban Tahabi, such as Anas (Radhi), narrated from:
قال صليت خلف النبى صلى الله عليه وسلم وأبى بكر وعمر وعثمان فلم اسمع احدا منهم يجهر ببسم الله الرحمن الرحيم
That is, I have prayed behind the Prophet صلى الله عليه وسلم, Abu Bakr Siddiq, Omar Farooq and Osman Radiyallahu Anhum. None of them heard Bismillahir Rahmanir Raheem to listen to the high voice.
Hadith no-8-11: Ibn Khuzaymah and Tahawi from Anas (may Allah be pleased with him) at Taburni Muajamul Kabir at Abu Nuiim Hulia narrates:
O Muhammad
That is, the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) used to recite 'Bismillahir Rahmanir Rahim' in the voice of Abu Bakr, Omar Farooq, RAbd al-Anhuma.
Hadith no-12-14: Abu Daud narrated from the Prophet An-Nahr (may Allaah have mercy on him)
أن النبى صلى الله عليه وسلم وأبابكر وعمر وعثمان كانوا يستفتحون القرآن بالحمد لله رب العالمين
That is, the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) used to start Qiraat from Abu Bakr, Omar Farooq, and Osman Radiyallahu Anhum 'Alhamdu Lillahi Rabil Alamin'.
Hadith No. 15: Imam Muslim Rahmatullahi narrated from Anas (May Allah be pleased with him):
Surely the Prophet (peace be upon him) used to launch Qiraat in the name of Abu Bakr, Omar and Osman Radiyallahu Anhum 'Alhamdu Lillahi Rabil Alamin'. And at the beginning of qira-'at, 'Bismillahir Rahmanir Rahim' would not have been used, nor would he at the end of Qiraat.

Hadith no.16: Ibn Abi Shaybah narrated from Abdullah bin Mas'ud (May Allah be pleased with him)
عن ابن مسعود رضى الله عنه أنه كان يخفى بسم الله الرحمن الر حيم والاستعاذة وربنالك الحمد
Hadrat'Abdullah bin Mas'ud (May Allah be pleased with him) used to recite 'Bismillahir Rahmanir Rahim' Aujul Bililla and 'Rabbana Lakhal Hamd'.
Hadith no.17: Imam Muhammad Kitab al-Aas narrated this from the Prophet Abraham (may peace be upon him)
قال اربع يخفيهن الامام بسم الله الرحمن الرحيم وسبحانك اللهم والتعوذ وامين
He said that in the four cases, Imam will recite in low voice - Bismillah, Subhanaka AllahuMamah, Auju Bilih and Amin.
Hadith No. 18-19 Imam Muslim, Abu Da'wah narrated from Rahmatullahi Alaih Aishah (May Allah be pleased with her):
قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يستفتم الصلاة بالتكبير والقراءة بالحمد لله رب العالمين
He said that the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) used to start the prayer with takbeer-i-tahreema and started qira-'at with 'al-hamdu lillahi rabbil alami'.
Hadith no-20: Abdur Razzaq narrated from Abu Fakhtah:
I love you
Hadrat Ali Murtodba (may Allah bless him) should not be praised by Alhamdulillah in loud voice.
In this context many more Ahadith Sharif may be presented, but we are here only enough to consider 20 hadiths. If you want to know details, then you can study the book of Tahabi and Sahih Bukhara Shaikh.
Conscience also wants Bismillah to not read in a loud voice. The Bismillah that is written at the beginning of every Surah is not part of the Surahs. Only the Surahs are written to split and the hadith has also been mentioned, that the good deeds that have not been started after 'Bismillah' are incomplete. It is because of the thought that Ibn al-Basrah falls in the beginning of Qiraat, but it falls in a low voice. Because A'uju is not part of any Surah.
Similarly, Bismillah is recited for blessing and it is read in a low voice. Because Bismillah is not even a part of every surah. However, the 'Bismillahir Rahmanir Rahim' in Surah Naml Sharif is part of that Surah and the Imam reads it in a loud voice. Because it is the verses of that Surah For this, the Imam read only the Quran Quran. But the Bismillah is not part of the Surah that is written in the Surah, because it is not part of the Surah, it is noteworthy that it should be recited in the lower voice. -
--------------------------------

https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=388889071535887&id=379212072503587


__