কদরের রাতের পূর্বে



কদরের রাতের পূর্বে –
সিদরাতুল মুনতাহার ঢালে ঢালে অগনিত ফেরেশতার অবস্থান। যাদের সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা। তারা সেখানে আল্লাহর ইবাদত করে। চুল পরিমাণ এতটুকু জায়গাও খালি নাই, যেখানে কোন না কোন ফেরেশতা অবস্থান করে না। উহার মধ্যখানে হযরত জিবরীল (আ.)-এর আসন। কদরের রাত্রিতে সেখানকার সকল ফেরেশতাদের সংগে লইয়া পৃথিবীতে অবতরণ করার জন্য আল্লাহ্ তা'আলা জিবরীল (আ.)-কে নির্দেশ দেন। এদের প্রত্যেকের হৃদয়েই আল্লাহ্ তা'আলা ঈমানদারদের প্রতি দয়া ও করুণা দান করিয়াছেন। ফলে শবে কদরে সূর্যাস্তের সংগে সংগে তাঁহারা জিবরীল (আ.)-এর সংগে অবতরণ করেন। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন– "প্রত্যেক কাজের জন‍্য ফেরেশতা ও রূহ্ অবতীর্ণ হয়।" (সুরা কদর) তাঁরা দুনিয়াতে অবতরণ করিয়া পৃথিবীর প্রতিটি ভূখণ্ডে ছড়াইয়া পড়ে এবং দণ্ডায়মান কিংবা সিজদারত অবস্থায় ঈমানদার নর-নারীর জন্য দু'আ করে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,– "ফযরের পূর্বে পর্যন্ত এই দোয়া অব্যাহত থাকে।(সুরা কদর)
তবে গীর্জা, মন্দির, অগ্নিপূজা ঘর, আবর্জনার ফেলার স্থান, যে ঘরে নেশাদার দ্রব্য থাকে, যে ঘরে মূর্তি স্থাপন করা থাকে ইত্যাদি অপবিত্র স্থানে তাঁহারা গমন করেন না। রাতভর তাঁহারা ঈমানদারদের জন্য দু'আ করিতে থাকে। হযরত জিবরীল (আ) প্রত্যেক ঈমানদারের সহিত মুসাফাহা করেন। ইহার লক্ষণ হইল, সেই রাতে খোদার ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়া হৃদয় বিগলিত হওয়া ও চক্ষু অশ্রুপূর্ণ হওয়া। হযরত জিবরীল (আ.)-এর মুসাফাহার ফলেই এমন হইয়া থাকে।
কা'ব (রা) বলেন, এই রাত্রে কেহ তিনবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করিলে একবারের বিনিময়ে আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে ক্ষমা করিয়া দেন, একবারের বিনিময়ে দোজখ হইতে মুক্তি দান করেন এবং একবারের বিনিময়ে জান্নাত দান করেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি কা'ব আল-আহবারকে জিজ্ঞাসা করিলাম যে, সঠিক বিশ্বাসে ইহা পাঠ করিবে, তাহার জন্য এই পুরস্কার? উত্তরে কা'ব (রা) বলেন, সঠিক বিশ্বাসী ছাড়া কি কেহ লায়লাতুল কদরের লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ বলেন? আমি- সেই আল্লাহ্ শপথ করিয়া বলিতেছি যে, কদরের রাত্রি কাফির মুশরিক ও মুনাফিকদের জন্য বড় ভারী হইয়া থাকে। যেন তাহাদের মাথার উপর পাহাড় চড়িয়া বসে। ঠিক সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত ফেরেশতারা এইভাবে দায়িত্ব পালন করিতে থাকে।

#কদর
#ইসলাম_ই_মুক্তির_দিশা

No comments:

__