পরস্পর ভালবাসা (মাজালিসে গাযযালী - ১১)



📚মাজালিসে গাযযালী ✍🏻ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)

11 একাদশ মজলিস

পরস্পর ভালবাসা

পনর রবিউল আউয়াল, সোমবার। পবিত্র আস্তানায় উপস্থিত ভক্তদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসা করিলেন, পরস্পর যে ভালবাসা হয় এমন ভালবাসা জায়েয কিনা? অথবা এরূপ ভালবাসা পরকালে কোন উপকারে আসিবে কিনা?


হযরত এরশাদ করিলেন, একের সাথে অন্যের ভালবাসা পরকালের কোন কাজেই আসিবে না, তবে যে ভালবাসা আল্লাহর জন্য হয়। যেমন- পীর ও আলেমদের সাথে ভালবাসা, ইহা উপকারে আসিবে। ইহা ব্যতীত নফসের তাড়নায় বা পার্থিব স্বার্থের বশীভূত হইয়া যে ভালবাসা স্থাপন করা হয় তাহা দূষণীয়; বরং এরূপ ভালবাসা দ্বারা মানুষ হারামে লিপ্ত হইয়া পড়ে। যেমন- কোন বেগানা মহিলার প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পতিত হওয়া। কিন্তু ভালবাসার দৃষ্টিতে দ্বিতীয়বার তাহার প্রতি তাকানো হারাম। হুযুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করিয়াছেন, তোমার প্রথম দৃষ্টির জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে না। কিন্তু দ্বিতীয়বার তাকানোর জন্য পাকড় ও করা হইবে।


নফসের তাড়নায় পার্থিব স্বার্থবশত যে ভালবাসা হয় তাহা চিরস্থায়ী নহে। কারণ, ইহা সৃষ্টির প্রতি ভালবাসা। আর সৃষ্টির প্রতি ভালবাসা নশ্বর, অবিনশ্বর নহে, ক্ষণস্থায়ী ও ধ্বংসশীল। বরং স্রষ্টার সাথে যে ভালবাসা স্থাপন করা হয় তাহা অবিনশ্বর ও চিরস্থায়ী। কারণ, তাহার অস্তিত্ব কেয়ামতে অবশ্য ফলদায়ক হইবে।


ইহার পর আমি আরয করিলাম, আজ এই দুনিয়ায় একে অন্যকে ভালবাসে, একে অন্যের সান্নিধ্য কামনা করে এবং একে অন্যের আপনজন। পরকালেও কি এমন সম্বন্ধ বিদ্যমান থাকিবে।

তিনি বলিলেন, পৃথিবীতে যেমন বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন আছে, পরকালেও তেমনি থাকিবে। বরং সেখানে যদি কাহারও মনে এই আশা জাগ্রত হয় যে, আমি অমুক বন্ধু বা অমুক আত্মীয়ের সাথে সাক্ষাত করিতে যাইব। এরূপ ধারণা পূর্ণভাবে মনে উদয় হইতে না হইতেই সে যে আসনে বসা থাকিবে তাহা গতিশীল হইয়া অগ্রসর হইতে থাকিবে।


আল্লাহ তাআলা বলেন, "পরহেযগারগণ ব্যতীত আজ এক বন্ধুর অন্য বন্ধুর শত্রুতে পরিণত হইবে"।

বেহেশতে কোন প্রকার দুঃখ-কষ্ট থাকিবে না। জান্নাতবাসীদের অবস্থা জানিতে চাহিলে আল্লাহর এই বাণীর প্রতি খেয়াল কর- জান্নাতবাসী যাহা চাহিবে তাহাই সেখানে মওজুদ পাইবে। তদ্রূপ অন্যান্য আয়াতেও জান্নাতের অবস্থা বর্ণনা করা হইয়াছে। সেইসব আয়াত পাঠ করিলেই জানিতে পারিবে।

----------------

No comments:

__