📚মাজালিসে গাযযালী ✍🏻ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)
রমযান মাসে মোমেনের মৃত্যু-
তেইশে রবিউল আউয়াল, মঙ্গলবার। দরবার শরীফের ভক্তদের মধ্য হইতে মাওলানা মোয়াইয়েদ আরয করিলেন, হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, যেব্যক্তি পবিত্র রমযান মাসে মৃত্যুবরণ করে তাহার আযাব হয় না। কিন্তু বুঝিতে পারিলাম না, কেয়ামত পর্যন্ত যত রমযান আছে সব রমযান এই বাণীর শামিল কিনা?
পীর ও মুরশিদ এরশাদ করিলেন, 'রওযাতুল ওলামা' কিতাবে বর্ণিত আছে, যে মোমেন রমযান মাসে মৃত্যুবরণ করে তাহার আত্মাকে বেহেশতে স্থান দেওয়া হয়। মাওলানা আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, পুণ্যবান এবং পাপীর মধ্যে কোন প্রকার তারতম্য আছে নাকি? এরশাদ করিলেন, পুণ্যবানদের বেলায় অবশ্য এরূপ হইবে। তবে পাপীদের বেলায় আল্লাহ ইচ্ছা করিলে বেহেশতে স্থান দিতে পারেন, অন্যথায় নাও দিতে পারেন।
আবার তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, বর্তমানে বেহেশতে কতজন লোক আছেন? এরশাদ করিলেন, পুরুষদের মধ্যে হযরত ইদ্রীস (আঃ) এবং হাবীব নাজ্জার (রঃ)। মহিলাদের সম্বন্ধে মতভেদ রহিয়াছে। কেহ বলেন, মারইয়াম (আঃ) আবার কেহ বলেন ফেরআউনের স্ত্রী হযরত আছিয়া।
বর্ণিত আছে, হযরত আছিয়া আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ)-এর প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু তাঁহার ঈমান সম্বন্ধে কেহই অবগত ছিল না। যখন শিশু হযরত মূসা (আঃ)-কে প্রতিপালন করার জন্য ফেরআউনের গৃহে আনা হইল তখন হযরত আছিয়া বলিলেন, ইহাকে আমরা পুত্ররূপে গ্রহণ করিব। আশা করি শীঘ্রই সে আমাদের উপকারে আসিবে।
কেহ কেহ বলেন, এই উপকারের বিষয়বস্তু ছিল আল্লাহর প্রতি আছিয়ার ঈমান আনা। শিশু অবস্থায়ই হযরত মূসা (আঃ)-কে নবুয়ত দান করা হইয়াছিল। হযরত মূসা (আঃ) যখন ইসলাম প্রচার করিতে আরম্ভ করেন তখন আছিয়। বলিলেন, ওহে ফেরআউন। আল্লাহর একত্ববাদ ও মূসার নবুয়তের প্রতি ঈমান আন। এই কথায় ফেরআউন ক্রোধান্বিত হইয়া আছিয়ার উপর অকথ্য নির্যাতন আরম্ভ করিয়া দিল। এই মালউনের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা ছিল হাতে-পায়ে পেরেক মারিয়া মাটির সাথে গাঁথিয়া রাখা।
আছিয়ার মুখে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার কথা শুনিয়া ফেরআউন বলিল, আছিয়া, তুমি এই কাজ হইতে বিরত থাক এবং আমাকে আল্লাহ বলিয়া স্বীকার কর।
আছিয়া বলিলেন, অসম্ভব' যিনি এই বিশ্বের প্রতিপালক তিনিই তোমার এবং আমার আল্লাহ। ফেরআউন তাঁহার হাতে পায়ে পেরেক মারিয়া বুকের উপর জ্বলন্ত আগুন রাখিয়া দিল। ইহাতেও যখন বিরত হইলেন না তখন তাঁহার বুকের উপর পাথরের পর পাথর দিয়া মারিয়া ফেলিল।
ধ্বংসের দরবারে জীবন সোপর্দকারী 'কেদাম' নামক স্থানের খেরকা পরিধানকারী একবার সাকীর দৃষ্টির সম্মুখে প্রেম শরবত পান করিল। সাকী ব্যতীত আর যাহা কিছু সবই সে পরিত্যাগ করিল।
তারপর মাওলানা জিজ্ঞাসা করিলেন, যেমন আছিয়া বলিয়াছিলেন, তেমনি হযরত ইউসুফ (আঃ) সম্বন্ধেও যোলায়খার স্বামী বলিয়াছিল- আমরা তাহাকে পুত্রবৎ গ্রহণ করিব। আশা করি শীঘ্রই সে আমাদের উপকারে আসিবে।
আছিয়ার কি উপকার হইয়াছিল তাহা তো দেখিলাম। কিন্তু যোলায়খার স্বামীর কি উপকার হইয়াছিল?
এরশাদ করিলেন, অনুপকার তো হয় নাই। কিন্তু উপকার সম্বন্ধে কোন কিছু কিতাবে নাই?
মাওলানা বলিলেন এই উপকার হইতে পারে যে যোলায়খা তাঁহার নিকট প্রেম নিবেদন করিতেন আর তিনি প্রত্যাখ্যান করিয়া তাঁহাকে দূরে সরাইয়া রাখিতেন এবং বলিতেন, যোলায়খা! তোমার লজ্জা হয় না যে তোমার স্বামী আমাকে পুত্রবৎ গ্রহণ করিয়াছেন।
এরশাদ করিলেন, ইহাও হইতে পারে। কিন্তু যোলায়খার ঘটনা তো ঐ পর্যন্ত যতদিন পর্যন্ত সে পর-স্ত্রী ছিল। তাহার নফসানী কামনা ছিল। কিন্তু যখন তাহাকে আপন আয়ত্তে লইয়া আসিলেন তখন উভয়ের মধ্যে নফসানী কামনা শেষ হইয়া রূহানী সম্পর্ক স্থাপিত হইল। হযরত ইউসুফ (আঃ) তাঁহার পবিত্রতা বজায় রাখিলেন। যোলায়খা নাফরমানী করিল। তিনি শাহী ফরমান পাইলেন। পূত-পবিত্র চরিত্রের অধিকারী ইউসুফ (আঃ)-এর উপর সে দোষারোপ করিল। ইহার ফলে যোলায়খার স্বামীর বাদশাহী ধ্বংস হইয়া গেল এবং রাস্তার ফকীরে পরিণত হইল।
মাওলানা জিজ্ঞাসা করিলেন, পরকালে সকলেই যৌবন লাভ করিবে। যোলায়খা ও কি যৌবন লাভ করিবেন?
এরশাদ করিলেন, পরকালে সকল মোমেন ও মোমেনা দুইটি সৌন্দর্যের অধিকারী হইবে। একটি স্বীয় কাজের প্রতিদান, দ্বিতীয়টি আল্লাহর দয়ার দান। যোলায়খা মোমেনা। সুতরাং সেও সৌন্দর্যের অধিকারিণী হইবে।
অন্যত্র দেখিয়াছি, পরকালে একমাত্র যোলায়খা ব্যতীত অন্য সকল রমণীই সৌন্দর্যের অধিকারিণী হইবে। কারণ, যোলায়খা এই দুনিয়ায়ই তাহার যৌবন চাহিয়া লইয়াছিল। কিন্তু হুর খোদার দান এক বিস্ময়কর সৌন্দর্যের অধিকারিণী হইবে। ইহার পর বলিলেন, আল্লাহ সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। হুযুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করিয়াছেন- "আল্লাহ সৌন্দর্যময় তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন।"
বর্ণিত আছে, হযরত ইউসুফ (আঃ) সীমাহীন সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন। মিসরের দুর্ভিক্ষে লোকের অনাহারে থাকার সংবাদ যখন তাঁহার কর্ণগোচর হইল, তিনি নির্দেশ দিলেন, ঘোষণা করিয়া দাও, লোকেরা যেন প্রাতদিন শহরের বাহিরে একত্র হয় এবং আমার সৌন্দর্য দেখিয়া তৃপ্ত হইয়া ফিরিয়া যায়। হযরত ইউসুফ (আঃ) সমবেত জনতার সম্মুখে স্বীয় পর্দা উঠাইয়া দিতেন এবং তাহাদিগকে তৃপ্ত হওয়ার সুযোগ দান করিতেন। যেব্যক্তি তাহাকে দেখিত সারাদিন সে আর ক্ষুধা অনুভব করিত না।
অন্তরের শান্তির সাথে এক নজর সুন্দর চেহারা দর্শন করা রাজ মুকুটের চেয়েও মূল্যবান। ইহা সারাজীবন স্মরণ রাখার জন্য যথেষ্ট।
অতঃপর মাওলানা বলিলেন, লোকে হুযুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনি বেশী সুন্দর না ইউসুফ (আঃ)? হুযুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করিলেন- ভাই ইউসুফ সুশ্রী আর আমি সুন্দর।
তারপর পীর ও মুরশিদ বলিলেন- হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর সৌন্দর্য ছিল চরম পর্যায়ের। কাফের সম্প্রদায় সময় অসময় বনী ইসরাঈলের উপর আক্রমণ করিত, তাই তাহারা ইউসুফ (আঃ)-এর তাবুত কাবীস পাহাড়ে লইয়া যাওয়ার মনস্থ করে। কিন্তু দিনের বেলা লইয়া যাওয়া অসুবিধাজনক ছিল। তাই রাতের অন্ধকারে মাটি খুঁড়িয়া তাবুত বাহির করিল এবং তাঁহার শবদেহের সৌন্দর্যের আলোতে পথ দেখিয়া কাবীস পাহাড়ে আসিয়া পৌঁছিল। এখানে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর বংশধরদের কবর ছিল। যেহেতু তিনি বাদশাহ ছিলেন তাই তাঁহার তাবুত কোব্বায় দাফন না করিয়া কাবীস পাহাড়ে দাফন করিল।
তেইশে রবিউল আউয়াল, মঙ্গলবার। দরবার শরীফের ভক্তদের মধ্য হইতে মাওলানা মোয়াইয়েদ আরয করিলেন, হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, যেব্যক্তি পবিত্র রমযান মাসে মৃত্যুবরণ করে তাহার আযাব হয় না। কিন্তু বুঝিতে পারিলাম না, কেয়ামত পর্যন্ত যত রমযান আছে সব রমযান এই বাণীর শামিল কিনা?
পীর ও মুরশিদ এরশাদ করিলেন, 'রওযাতুল ওলামা' কিতাবে বর্ণিত আছে, যে মোমেন রমযান মাসে মৃত্যুবরণ করে তাহার আত্মাকে বেহেশতে স্থান দেওয়া হয়। মাওলানা আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, পুণ্যবান এবং পাপীর মধ্যে কোন প্রকার তারতম্য আছে নাকি? এরশাদ করিলেন, পুণ্যবানদের বেলায় অবশ্য এরূপ হইবে। তবে পাপীদের বেলায় আল্লাহ ইচ্ছা করিলে বেহেশতে স্থান দিতে পারেন, অন্যথায় নাও দিতে পারেন।
আবার তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, বর্তমানে বেহেশতে কতজন লোক আছেন? এরশাদ করিলেন, পুরুষদের মধ্যে হযরত ইদ্রীস (আঃ) এবং হাবীব নাজ্জার (রঃ)। মহিলাদের সম্বন্ধে মতভেদ রহিয়াছে। কেহ বলেন, মারইয়াম (আঃ) আবার কেহ বলেন ফেরআউনের স্ত্রী হযরত আছিয়া।
বর্ণিত আছে, হযরত আছিয়া আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল মূসা (আঃ)-এর প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু তাঁহার ঈমান সম্বন্ধে কেহই অবগত ছিল না। যখন শিশু হযরত মূসা (আঃ)-কে প্রতিপালন করার জন্য ফেরআউনের গৃহে আনা হইল তখন হযরত আছিয়া বলিলেন, ইহাকে আমরা পুত্ররূপে গ্রহণ করিব। আশা করি শীঘ্রই সে আমাদের উপকারে আসিবে।
কেহ কেহ বলেন, এই উপকারের বিষয়বস্তু ছিল আল্লাহর প্রতি আছিয়ার ঈমান আনা। শিশু অবস্থায়ই হযরত মূসা (আঃ)-কে নবুয়ত দান করা হইয়াছিল। হযরত মূসা (আঃ) যখন ইসলাম প্রচার করিতে আরম্ভ করেন তখন আছিয়। বলিলেন, ওহে ফেরআউন। আল্লাহর একত্ববাদ ও মূসার নবুয়তের প্রতি ঈমান আন। এই কথায় ফেরআউন ক্রোধান্বিত হইয়া আছিয়ার উপর অকথ্য নির্যাতন আরম্ভ করিয়া দিল। এই মালউনের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা ছিল হাতে-পায়ে পেরেক মারিয়া মাটির সাথে গাঁথিয়া রাখা।
আছিয়ার মুখে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার কথা শুনিয়া ফেরআউন বলিল, আছিয়া, তুমি এই কাজ হইতে বিরত থাক এবং আমাকে আল্লাহ বলিয়া স্বীকার কর।
আছিয়া বলিলেন, অসম্ভব' যিনি এই বিশ্বের প্রতিপালক তিনিই তোমার এবং আমার আল্লাহ। ফেরআউন তাঁহার হাতে পায়ে পেরেক মারিয়া বুকের উপর জ্বলন্ত আগুন রাখিয়া দিল। ইহাতেও যখন বিরত হইলেন না তখন তাঁহার বুকের উপর পাথরের পর পাথর দিয়া মারিয়া ফেলিল।
ধ্বংসের দরবারে জীবন সোপর্দকারী 'কেদাম' নামক স্থানের খেরকা পরিধানকারী একবার সাকীর দৃষ্টির সম্মুখে প্রেম শরবত পান করিল। সাকী ব্যতীত আর যাহা কিছু সবই সে পরিত্যাগ করিল।
তারপর মাওলানা জিজ্ঞাসা করিলেন, যেমন আছিয়া বলিয়াছিলেন, তেমনি হযরত ইউসুফ (আঃ) সম্বন্ধেও যোলায়খার স্বামী বলিয়াছিল- আমরা তাহাকে পুত্রবৎ গ্রহণ করিব। আশা করি শীঘ্রই সে আমাদের উপকারে আসিবে।
আছিয়ার কি উপকার হইয়াছিল তাহা তো দেখিলাম। কিন্তু যোলায়খার স্বামীর কি উপকার হইয়াছিল?
এরশাদ করিলেন, অনুপকার তো হয় নাই। কিন্তু উপকার সম্বন্ধে কোন কিছু কিতাবে নাই?
মাওলানা বলিলেন এই উপকার হইতে পারে যে যোলায়খা তাঁহার নিকট প্রেম নিবেদন করিতেন আর তিনি প্রত্যাখ্যান করিয়া তাঁহাকে দূরে সরাইয়া রাখিতেন এবং বলিতেন, যোলায়খা! তোমার লজ্জা হয় না যে তোমার স্বামী আমাকে পুত্রবৎ গ্রহণ করিয়াছেন।
এরশাদ করিলেন, ইহাও হইতে পারে। কিন্তু যোলায়খার ঘটনা তো ঐ পর্যন্ত যতদিন পর্যন্ত সে পর-স্ত্রী ছিল। তাহার নফসানী কামনা ছিল। কিন্তু যখন তাহাকে আপন আয়ত্তে লইয়া আসিলেন তখন উভয়ের মধ্যে নফসানী কামনা শেষ হইয়া রূহানী সম্পর্ক স্থাপিত হইল। হযরত ইউসুফ (আঃ) তাঁহার পবিত্রতা বজায় রাখিলেন। যোলায়খা নাফরমানী করিল। তিনি শাহী ফরমান পাইলেন। পূত-পবিত্র চরিত্রের অধিকারী ইউসুফ (আঃ)-এর উপর সে দোষারোপ করিল। ইহার ফলে যোলায়খার স্বামীর বাদশাহী ধ্বংস হইয়া গেল এবং রাস্তার ফকীরে পরিণত হইল।
মাওলানা জিজ্ঞাসা করিলেন, পরকালে সকলেই যৌবন লাভ করিবে। যোলায়খা ও কি যৌবন লাভ করিবেন?
এরশাদ করিলেন, পরকালে সকল মোমেন ও মোমেনা দুইটি সৌন্দর্যের অধিকারী হইবে। একটি স্বীয় কাজের প্রতিদান, দ্বিতীয়টি আল্লাহর দয়ার দান। যোলায়খা মোমেনা। সুতরাং সেও সৌন্দর্যের অধিকারিণী হইবে।
অন্যত্র দেখিয়াছি, পরকালে একমাত্র যোলায়খা ব্যতীত অন্য সকল রমণীই সৌন্দর্যের অধিকারিণী হইবে। কারণ, যোলায়খা এই দুনিয়ায়ই তাহার যৌবন চাহিয়া লইয়াছিল। কিন্তু হুর খোদার দান এক বিস্ময়কর সৌন্দর্যের অধিকারিণী হইবে। ইহার পর বলিলেন, আল্লাহ সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। হুযুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করিয়াছেন- "আল্লাহ সৌন্দর্যময় তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন।"
বর্ণিত আছে, হযরত ইউসুফ (আঃ) সীমাহীন সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন। মিসরের দুর্ভিক্ষে লোকের অনাহারে থাকার সংবাদ যখন তাঁহার কর্ণগোচর হইল, তিনি নির্দেশ দিলেন, ঘোষণা করিয়া দাও, লোকেরা যেন প্রাতদিন শহরের বাহিরে একত্র হয় এবং আমার সৌন্দর্য দেখিয়া তৃপ্ত হইয়া ফিরিয়া যায়। হযরত ইউসুফ (আঃ) সমবেত জনতার সম্মুখে স্বীয় পর্দা উঠাইয়া দিতেন এবং তাহাদিগকে তৃপ্ত হওয়ার সুযোগ দান করিতেন। যেব্যক্তি তাহাকে দেখিত সারাদিন সে আর ক্ষুধা অনুভব করিত না।
অন্তরের শান্তির সাথে এক নজর সুন্দর চেহারা দর্শন করা রাজ মুকুটের চেয়েও মূল্যবান। ইহা সারাজীবন স্মরণ রাখার জন্য যথেষ্ট।
অতঃপর মাওলানা বলিলেন, লোকে হুযুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনি বেশী সুন্দর না ইউসুফ (আঃ)? হুযুর (সল্লল্লাহু আলাইহে ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করিলেন- ভাই ইউসুফ সুশ্রী আর আমি সুন্দর।
তারপর পীর ও মুরশিদ বলিলেন- হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর সৌন্দর্য ছিল চরম পর্যায়ের। কাফের সম্প্রদায় সময় অসময় বনী ইসরাঈলের উপর আক্রমণ করিত, তাই তাহারা ইউসুফ (আঃ)-এর তাবুত কাবীস পাহাড়ে লইয়া যাওয়ার মনস্থ করে। কিন্তু দিনের বেলা লইয়া যাওয়া অসুবিধাজনক ছিল। তাই রাতের অন্ধকারে মাটি খুঁড়িয়া তাবুত বাহির করিল এবং তাঁহার শবদেহের সৌন্দর্যের আলোতে পথ দেখিয়া কাবীস পাহাড়ে আসিয়া পৌঁছিল। এখানে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর বংশধরদের কবর ছিল। যেহেতু তিনি বাদশাহ ছিলেন তাই তাঁহার তাবুত কোব্বায় দাফন না করিয়া কাবীস পাহাড়ে দাফন করিল।
No comments:
Post a Comment